Friday, May 31, 2019

Breaking News|| Bangladeshi Scientist breakthrough a new Antivirul drug

Howard University researchers within the Department of Biology have published a breakthrough manuscript today on developing broad anti-viral drugs that will inhibit pathogenic viruses from replication. This is a stark difference from current anti-viral drugs that become less effective as viruses become more resistant. The report, published by peer-reviewed bio-medical journal Oncotarget and featured on the journal cover page, takes a detailed look at the Howard University team’s innovative approach to isolating anti-viral compounds and the possibility of future drugs that will offer effective and durable treatment for many pathogenic viruses.
As a proof of concept, the paper detailed the effectiveness of the drugs against Herpes Simplex Virus-1, a common virus that causes painful sores on genitals and/or mouth.
“The work of Dr. Ullah and his research team is a critical breakthrough in the development of anti-viral drugs,” says Provost and Chief Academic Officer Anthony K. Wutoh. “We anticipate that this work will ultimately impact the development of medications to treat various illnesses, including more effective treatments against Herpes Simplex Virus-1.”

Associate Professor of Biology Hemayet Ullah, Ph.D. leads the team of student and faculty researchers and identified a host protein called RACK1, which is often used by pathogenic viruses for their own replication. The small molecules developed by the team effectively render the host RACK1 protein unavailable to the viruses; thereby inhibiting the virus replication within the host cells. Ullah says the results are encouraging and indicate that further research will establish the potential compounds as durable anti-viral drugs. As these drugs do not directly target the virus, Ullah predicts that the viruses would have almost no opportunity to develop resistance, effectively making this a durable drug discovery approach.
“Though the results are preliminary but they show high efficacy in the lab experimentation. The novelty of this approach ensures that the drugs will not be only specific to a single virus but will be effective against diverse pathogenic viruses that use the same host factor. A number of human pathogenic viruses are already known to use the same host factor. What we now need are tests in animal model and in pre-clinical trials. Hopefully with funding available, we will be able achieve these goals in 2 to 3 years,” explained Ullah.
He says most of the wet lab research works were completed at the University, citing the modern lab space inside the Interdisciplinary Research Center as a facilitator for multi-lab collaboration. In addition to graduate students, who serve as researchers for the project, Ullah credits Qiyi Tang, Ph.D., and Sergei Nekhai, Ph.D., both of the College of Medicine and Dr. Dakshanamurthy’s lab at Georgetown University, with sharing his vision for experimentation and appreciating interdisciplinary collaboration.
Source: Internet

মন্ত্রির সম্পদ একটি ভাঙ্গা কুড়ে ঘর আর ২৫ বছরের পুরনো সাইকেল!!

একজন মন্ত্রির নূন্যতম সম্পদ কত হতে পারে? নিদেনপক্ষে লণ্ডন-নূইয়র্ক দু’ একখানা বাড়ি। সযতনে রাখা ব্যাংক ব্যালান্স। ঝাঁ চকচকে কোটি টাকার গাড়ি। এটাই তো স্বাভাবিক। তাই বলে মন্ত্রি থাকবেন ভাঙা এক কুড়েঘরে, চালাবেন ২৫ বছরের পুরনো এক বাইসাইকেল! অবিশ্বাস্য! না বিশ্বাস করেই বা উপায় কি! গেল সপ্তাহেই তো ভারতের মন্ত্রি হিসেবে শপথ নিলেন প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গী।
গেল সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকে নাগাড়ে শপথ পাঠ দেখতে দেখতে দর্শকাসনে ঠায় বসে অনেকেই ক্লান্ত। কিন্তু সাড়ে আটাট ফের যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল রাইসিনার উঠোনে।
রাষ্ট্রপতির সচিব যেই ঘোষণা করলেন, “রাজ্য মন্ত্রী হিসাবে এ বার শপথ নেবেন শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি..”। ওমনি হাততালির ঢেউ উঠল! কে ইনি? একেবারেই সাধারণ গোছের আধাছেড়া সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা। মাথার চুল উস্কো খুস্কো, হাওয়ায় উড়ছে! 
হ্যাঁ, তাঁকে নিয়ে উন্মাদনা এমনই। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর লক্ষ লক্ষ ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ শহুরে জীবনের চাকচিক্য, বিলাস, সুবিধা থেকে তিনি অনেক দূরে। বালাসোরের এক ঝুপড়ি বাড়িই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা।
 
এবার লোকসভা ভোটে ওড়িশার বালাসোর আসন থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গি। তাঁর রাজ্যের মানুষ বলেন, ‘ওড়িশার মোদী’। বালাসোরে বিজু জনতা দলের প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে তিনি হারিয়েছেন ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে।

Thursday, May 30, 2019

সম্প্রীতির অনন্য নজির: অযোধ্যায় মন্দিরে ইফতারের আয়োজন করলো হিন্দু সন্ন্যাসীরা

রাম মন্দির নাকি বাবরি মসজিদ! এই বিতর্কে দগ্ধ অযোধ্যা। এবার তাতেই প্রলেপ দিতে উদ্যোগী হলেন অযোধ্যাবাসী। অযোধ্যার এক মন্দিরে আয়োজন করা হল ইফতারের। সোমবার বিতর্কিত রাম জন্মভূমির কাছে অযোধ্যার ৫০০ বছরের পুরাতন সূর্য কুঞ্জ মন্দিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের যারা রোজা রাখেন তাদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেন হিন্দু সন্ন্যাসীরা।
এ অনুষ্ঠানের ইউএসপি-ই হল কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে ভোট পর্ব মিটতেই ওই ইফতারের আয়োজন করা হয়। ৫০০ বছরের পুরনো সূর্য কুঞ্জ মন্দির থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বিতর্কিত রাম জন্মভূমি এলাকা। কোনরকম রাজনীতির রং বাদ দিয়েই ইফতারের আয়োজন করেছেন সন্ন্যাসীরা।
এ অনুষ্ঠানের গায়ে যাতে রাজনীতির রং না লাগে তার জন্য সপ্তম দফাযর ভোট শেষ হওয়ার পর ওই ইফতার মজলিস এর আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোগতারা। অযোধ্যায় সব ধর্মের মানুষের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতেই এই অরাজনৈতিক আয়োজন বলে জানিয়েছেন, মোহান্ত যুগল কিশোর শরণ শাস্ত্রী। 
সূত্র: টিডিএন বাংলা।
 

খুব কাছের দ্বীপ সেন্টেনিয়েল আইল্যাণ্ড!! এখেনো যেখানে বাস অন্ধকার জগতের রহস্যময় মানুষের!!


ভ্রমনের জন্য আপনার অঢেল টাকা আছে, প্রযুক্তি আছে, বাহন আছে- কিন্তু চাইলেই কি আপনি পৃথিবীর সব জায়গায় যেতে পারবেন? উত্তর- না।  
আর একবার সভ্যতার বাইরে- বিদ্যুত, মোবাইল ফোন, সুপেয় পানি, মজার মজার খাবার, অত্যাধুনিক চিকিৎসা, শিক্ষা সহ আমাদের যাপিত জীবনের সমস্ত উপকরণ ছাড়া নিজেকে ভাবুন তো! তাও এই একুশ শতকে!! পারবেন একদিন কাটাতে? অথচ আমাদের খুব কাছেই রয়েছেন এমন মানুষেরা। যাদের কোন শিক্ষা নেই, প্রযুক্তি নেই, সভ্যতার কোন ছোঁয়া নেই- এমনকি পোশাকও নেই। এমনকি সেখানে কত মানুষ বাস করেন, তারও কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই!!
ভালো কথা, প্রশ্ন উঠতে পারে আমাদের মানুষরা কেন তাদের কাছে সভ্যতার আলো পৌঁছে দিচ্ছে না! কারন এ পর্যন্ত বহুবার চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন এই জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে মানুষ। এমনকি কেউ কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে তাদের জীবিত ফিরে আসার নজিরও নেই বললেই চলে। খালি হাতে তো দূরের কথা ভারতীয় বিমান সেনারা হেলিকপ্টারে গিয়েও মুহুর্মুহ তীরের আঘাতে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরে এসেছে। সেই থেকে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েই ও পথ আর কাউকে মাড়াতে দেয় না। 
বিশ্বের তাক লাগানো ও ভাবনায় ফেলে দেয়ার মতো নিষিদ্ধ দ্বীপটি রয়েছে আমাদের খুব কাছেই। একসময়ের কালাপানি নামে কুখ্যাত আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটিই এই সেন্টেনিয়েল আইল্যাণ্ড। যেখানে গহীন জঙ্গলে এখনো সভ্যতার কোন ছোঁয়া ছাড়াই টিকে রয়েছেন অগনিত মানুষ। 
২০০৬ সালে আন্দামান দ্বীপের দুইজন জেলে এ দ্বীপের কাছাকাছি মাছ ধরতে যায়।  রাতের বেলা অত্যধিক মদ পানে ঘুমিয়ে পড়লে সমুদ্র স্রোতে ভেসে তারা দ্বীপে চলে যায়। দ্বীপ বাসীরা জেলেদের নিসংসভাবে হত্যা করে। ভারতীয় কোস্ট গার্ড জেলেদের লাশ উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার পাঠায় দ্বীপ বাসীরা তাদের হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে তীর ছুড়তে থাকে।  যদিও উদ্ধার অভিযানে আসা হেলিকপ্টার থেকে তাঁদের মরদেহ দেখা গিয়েছিলো। উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারের পাখার ঘূর্ণনে সৃষ্ট প্রবল বাতাদের তোড়ে সেন্টিনেলদের অল্পগভীর কবরের মাটি সরে গিয়ে ঐ দুজন জেলের মৃতদেহ দেখা যায়। কোস্ট গার্ড তীরের মুখে লাশ উদ্ধার না করেই ফিরে আসে।
এর পর ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নেয় সেন্টিনল বাসীদের জীবন যাত্রা বাইরের প্রভাবমুক্ত রাখার। ভারত সরকার তাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা রক্ষার্থে দ্বীপের তিন কিলোমিটারের মধ্যে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী হচ্ছে আন্দামানি জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি জাতিগোষ্ঠী। বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এই জাতি দক্ষিণ এশীয় জনগোষ্ঠীগুলোর একটি। গ্রেট আন্দামান উত্তর সেন্টিনেলী দ্বীপপুঞ্জে এই জনগোষ্ঠীর বাস। বহিরাগতদের ওপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য তারা বিশেষভাবে পরিচিত। সেন্টিনেলী জাতি মূলত একটি শিকারী-নির্ভর জাতি। তারা তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ শিকার, মাছ ধরা, এবং বন্য লতাপাতার মাধ্যমে সংগ্রহ করে। এখন পর্যন্ত তাদের মাঝে কৃষিকাজ করা বা আগুন ব্যবহারে প্রমাণ পাওয়া যায় না
 এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে সেন্টিনেলীদের জনসংখ্যার কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। ধারণা অনুযায়ী এদের জনসংখ্যা সর্বনিম্ন ৩৯ থেকে ২৫০-এর মধ্যে, এবং সর্বোচ্চ ৫০০ পর্যন্ত। ২০০১ সালে পরিচালি ভারতের জনপরিসংখ্যানে ৩৯ জন পৃথক ব্যক্তির উপস্থিতি রেকর্ড করা হয় যাদের মাঝে ২১ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। নিরপত্তাজনিত কারণে এই জরিপটি প্রয়োজনের চেয়েও বেশি দূর থেকে পরিচালনা করা হয়েছিলো এবং এটি সুনিশ্চিতভাবেই ৭২ বর্গকিলোমিটার (১৮,০০০ একর) আয়তনে দ্বীপটির সঠিক জনসংখ্যা নির্দেশ করে না। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে সংঘটিত ভূকম্পন ও সংশ্লিষ্ট সুনামির ফলে সেন্টিনেলীদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ওপর সৃষ্ট কোনো মধ্যম বা দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের কথা জানা যায় না। শুধু এটুকু নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তারা এই দুর্যোগের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সমর্থ হয়েছে।

 ১৯৭৫ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির একজন পরিচালক একটা তথ্যচিত্র বানাবার উদ্দেশ্যে গিয়ে পৌঁছিয়েছিলেন সেই দ্বীপে। কিন্তু হিংস্র উপজাতিরা তার পায়ে বিষাক্ত তীর মারে ফলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। তখন থেকেই সেখানে কারও প্রবেশাধিকার নেই। তারপর আর কেউই সেখানে যেতে খুব একটা ঝুঁকি নেয় না।
কাগজে কলমে সেন্টিনেল ভারতের অধিকারে থাকলেও বাস্তবে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন। এখন পর্যন্ত ভারত সরকারও সেন্টিনেল দ্বীপ সম্পর্কে তেমন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে নি। উল্লেখ্য কুট জাতি হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮৮০ সালে দ্বীপটি দখলের পায়তারা করে । এ উদ্দেশ্য তারা দ্বীপ থেকে কয়েকজন অধিবাসী ধরে নিয়ে আসে।  অপহরনের উদ্দেশ্য ছিল তাদের ভাল খাবার দাবার পরিবেশ দিয়ে তাদের মন জয় করে দ্বীপের দখল নেওয়া। কিন্ত ব্রিটিশদের এই চেষ্টা গোড়াতেই শেষ হয়ে যায় । কারন দ্বীপবাসীদের ধরে আসার পর পরই দ্বীপবাসীরা মারা । এর কারন হিসেবে ধারনা করা হয় তাদের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। সভ্য জগত থেকে অনেক কাল দূরে থাকায় ধারনা করা হয় সর্দি-কাশির মত সাধারন রোগে এরা মারা যেতে পারে !
১৯৬৭ সাল থেকে পোর্ট ব্লেয়ারে অবস্থিত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সেন্টিনেলদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। এসব অভিযানে তাঁদেরকে উপহার হিসেবে সমুদ্র সৈকতে খাবার ছড়িয়ে (যেমন: নারকেল) বন্ধুত্ব স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। এসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেন্টিনেলদের মধ্যে তৈরি বহিরাগতদের সম্পর্কে সৃষ্ট হিংস্র মনোভাব দূর করার চেষ্টা করা হয়। কিন্ত বাস্তবে এসব কোন কাজে আসে নি।
এর পরে ১৯৯১ সালে ভারত সরকার পুনরায় তাদের সাথে সন্ধি করার চেষ্টা করে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে তারা জানিয়ে দেয় যে, তারা বাইরের পৃথিবীর কারও সাথে যোগাযোগ রাখতে চায় না। তারপর থেকে সেন্টিনালিসরা তাদের নির্বিঘ্ন জীবনে ফিরে যায়। পরে ২০০৪ সালের সুনামীতে দ্বীপের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। ভারত সরকার পুনরায় দ্বীপ বাসীরা বেঁচে আছে কিনা জানা জন্যে হেলিকপ্টার পাঠায় দ্বীপ বাসীরা হেলিকপ্টারের দিকে তীর ছোড়ে স্বাগত জানিয়ে জানান দেয় যে তারা বেঁচে আছে।
তো ভেবে দেখুন আমাদের জানার বাইরে এই পৃথিবীতেই কত কিছু লুকিয়ে আছে! যেগুলো জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে পারি, গ্যালাক্সি জয়ের স্বপ্নও দেখতে পারি- কিন্তুেআমাদেরই খুব কাছে লুকিয়ে থাকা অপূর্ সৃষ্টিগুলোর রহস্যভেদ করা হয়দেত আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব হয়ে উঠবে না।


Wednesday, May 29, 2019

অফিসে নিজের সন্তানদের ছবি ঝুলান, আমার নয়: উদ্বোধনী ভাষণে ইউক্রেনের নয়া প্রেসিডেন্ট

প্রত্যেককে নিজের অফিসে সন্তানদের ছবি ঝোলানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। গত ২৭ মে দেয়া উদ্বোধনী ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি।   


জেলেনস্কি বলেন, আমরা দেশকে সব সম্ভাবনা দিয়ে গড়বো যেখানে আইনের চোখে সবাই হবে সমান এবং শাসনকাজ চলবে সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে। আর তা বাস্তবায়ন করতে আমাদের প্রয়োজন জনগণের শাসন, যারা জনগণের জন্য কাজ করবে।

এর আগে নির্বাচনে বিজয়ের পর জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন, আমি কখনো আপনাদের বিশ্বাসের অমর্যাদা করব না।

উল্লেখ্য, নির্বাচনে দাঁড়াবার আগে জেলেনস্কির কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না এবং তিনি একবার টেলিভিশনে মজা করে প্রেসিডেন্টের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
প্রেসিডেন্টের উদ্বোধনী ভাষণ শুনতে এখানে ক্লিক করুন

This photo taken from khulna in 2011 by sony compact camera

Monday, May 27, 2019

দেখিনা কিছু, দেখা হয়না

বহেমিয়ান জীবনে কত ইচ্ছেরা ঘুরে বেড়ায়।
এই মনে হয় ডুয়ার্সের চা বাগানের মালি হয়ে যাই। ভেজা চা বাগানের চুয়ে পড়া জলে মিশে থাক ঘাম। মেঘের কুণ্ডলি ছুয়ে বলি, হারিয়ে যা দুরের পাহাড়ে, আমিও হব তোর সঙ্গী.
এই ভাবি খালাসী হয়ে যাই জাহাজের। স্টীমার এর ভেঁপু, আজ ভেনিস কাল রেঙ্গুন, পরশু ইস্তানবুল ঘুরে, শত মানুষ, শত মন, শত সহস্র অনুরাগ, দুঃখবোধ বুকে বয়ে ভেসে চলি গন্তব্যহীন পথে।
অথবা ট্রেনে চেপে কলকাতা, সিঙ্গুর ঘুরে অজানা স্টেশনের মধ্যরাত, কুণ্ডলি পাকানো ঘুম।
কিছুই হয়না! কংক্রিট কারাগারের প্রকোষ্ঠে নিয়মের শেকল জড়িয়ে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত শ্রান্ত রাত আসে, ভোর ঽয় , চাদ ওঠে জোৎস্নার জোয়ারে প্লাবিত জনপদে প্রেম আসে। প্রখর রোদ, বৃষ্টি - গোধূলি এসে চলে যায়। 

 দেখিনা কিছু, দেখা হয়না।

Sunday, May 26, 2019

তোমাকে কিছু দেয়া হয়নি!!

তোমাকে কিছু দেয়া হয়নি
বিষন্নতার মেঘ আঁচলে লুকিয়ে রেখেছিল রোদ্দুর
অন্ধকারে দীর্ঘশ্বাস জমে জমে সাইক্লোন, ফেনিল বায়ূূ
রোদ উঠেছিল ঠিক ঝলমলে, 
অতঃপর তলানিতে ঝাঁ চকচকে কিছু অঙ্গার দেখে
বুঝে নিয়েছিলাম- এ ভস্ম আমার হৃৎপিণ্ড থেকেই জন্ম নিয়েছিল
ঠিক যেখানে জন্ম নিয়েছিল এক গ্যালাক্সি প্রেম। 
২৭/০৫/১৯

খালি পেটে লিচু: ভারত ও বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর কারণ

Saturday, May 25, 2019

ধারাবাহিক কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-৭

(সাত)
  ধানমন্ডি সাতাশ নম্বরের শেষ মাথায় লাল ইটের ভবন। পাশেই ছায়ানট। হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্বুলের ভবনটা তিন তলা। নিচ তলায় অফিস রুম। লাইব্রেরী। ছোট্ট খেলার মাঠ। একটা বাস্কেট বল কোর্ট। এটারই এক পাশে টেনিস লন। নিচতলার ডানদিকের বিশাল রুমে কম্পিউটার ল্যাব। টিচার্স কমন রুম। শান্তনুদের ব্যাচে শিক্ষার্থী ৫২ জন। তিন তলায় সাজানো ক্লাস রুম। শান্তনুর বাসা থেকে স্কুল পনের মিনিটের পথ। বেশিরভাগ সময় সামদানি সাহেব গাড়ি দিয়ে ড্রপ দেন। শান্তনু একা ফেরে। মইনাক আর রাশেদ ছাড়াও শান্তনুর আরেকজন খুব ঘনিষ্ট বন্ধু নেহা।
    নেহাদের বাসা লেকপাড়েই। ১৬/এ নম্বর রোডের শেষ মাথার সবুজ ঘেরা বাড়িটা। নেহার বাবা নাজমুল ইমাম। দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। গামেণ্টস এর ব্যবসা। খুব নাম ডাক। ফেরার সময়ে বেশিরভাগ সময়েই নেহার গাড়িতে ১৬/এ পর্যন্ত গিয়ে নেমে রিকশা ধরে শান্তনু। নেহার পুরো নাম নুরুননাহার। নুরুন্নাহার নেহা। দাদি খুব আদর করে নাম রেখেছিলেন নুরুন্নাহার। নুর মানে আলো। আলোয় আলোয় আলোকিত। আলোর মতোই চেহারা। বাম গালের ঠিক মাঝখানে একটা তিল। ঝকমকে দাত। স্কুল ড্রেসে দুই বেনীতে অদ্ভুত একটা মায়া মাখানো চেহারা। টানা চোখ। ধবল শাদা গায়ের রঙ। মিস্টি হাসিতে টোল পড়ে। ও লেভেলেই ভর্তি হয়েছে নেহা। এর আগে কোন একটা স্বুলে পড়তো। এইতো মাস ছয়েক আগে কোর্স  শুরু হলো।
    সেদিন ছিল শনিবার। সকাল ৯টা থেকে স্কুল। সামদানি সাহেব নামিয়ে দিলেন শান্তনুকে। বৃষ্টি হচ্ছিল গুড়ি গুড়ি। এক দৌড়ে বারান্দায় শান্তনু। পুরু চশমায় ফোটা ফোটা বৃষ্টির জল। ছোট খাটো সৌম্য চেহারা। কাধেঁ স্কুল ব্যাগ। বৃষ্টির পানিতে ঘোলা হয়ে গিয়েছিল পুরু চশমা। আবছা দেখছিল। ঠিক সামনেই দাড়ানো নেহা। অফিস রুমের সামনে। সাদা কালো চেক এর স্কুল ড্রেস। শাদা কেডস। স্পষ্ট মনে আছে শান্তনুর। পকেট থেকে রুমাল বের করে গ্যাস মুছে তাকিয়েছিল। ক্লাসের সব বন্ধুদের সাথেই ভালো সম্পর্ক শান্তনুর। শান্তশিষ্ট আর মৃদুভাষী বলে সবার প্রিয়ও। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স প্রীতির কারনে অনেকে মজা করে নামও বদলে ফেলেছে শান্তনুর। শান্তনুর বাবা রেডিওতে চাকুরি করেন। শান্তনুও ক্লাস পার্টিতে একবার একটা ট্রানজিষ্টর প্রেজেন্ট করেছিল। সেই থেকে বন্ধুরা মি. ট্রানজিসন্টর বলেও ডাকে আড়ালে আবডালে। মুখ টিপে হাসে। শান্তনু বোঝে সব। কিন্তু এমন করে কাউকে তো ভালো লাগেনি কখনো।
    গাড়ি থেকে নামতে গিয়ে খানিকটা ভিজে গিয়েছিল শান্তনু। নেহারও চুল ভেজা ভেজা। পোশাকে জলের ছাপ। আকাশ বেশ কালো হয়ে আড়াল করেছে আলোকে। দিনের বেলাতেও বারান্দায় বাতি জ্বলছে। এখানে সেখানে ছেলে মেয়েদের জটলা। পনের বসন্তের একটা কিশোরের মনে কী যেন খেলে যায় নেহাকে দেখে। মনে হয় যুগ জনমের চেনা কেউ। কাউকে কাউকে প্রথম দেখাতেই এত আপন মনে হয়, নেহাকে না দেখলে তা হয়তো এ জীবনে অনুভব করতে পারতো না শান্তনু। পুরু চশমার ভেতর দিয়ে হা করে তাকিয়ে ছিল কিছুক্ষন। নেহাও হয়তো বুঝতে পারে বিষয়টি। মিস্টি একটা হাসিতে এই তাকানোর জবাবটা দিয়ে ফেলে নিজের অজান্তে। ওই হাসিতে যেন আকাশ ফর্সা হয়ে আসে। মেঘ কেটে উকিঁ দেয় জ্বলজ্বলে সূর্য।
    বারান্দা ছেড়ে তিন তলার ক্লাসরুমে ছুটে যায় শান্তনু। চিরচেনা হইচই। একান্ন জন পুরনো বন্ধুর সান্নিধ্য কিছু সময়ের মধেই ভুলিয়ে রাখে মনের আকাশে উকিঁ দেয়া একটা নতুন সূর্যের কথা। প্রথম ক্লাস জামান স্যারের। ঘন্টা বাজে। জামান স্যারের সাথে ক্লাসরুমে ঢোকে নতুন অতিথি নেহা। শান্তনুর বুকের ভেতরটা ধড়াস করে ওঠে। যেন এই মুহুর্তটারই প্রার্থনা করছিল এতক্ষণ। সে বন্ধু হোক আর যাই হোক। এ যেন হাজার বছরের চেনা কেউ। এত ভালো কেন লাগছে। বুকের ভেতর কেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে। কিছুই বুঝতে পারেনা শান্তনু। হয়তো কিছু অনুভূতির কোন ব্যাখ্যা থাকেনা। মানব মনের জটিল রসায়নে বিক্রিয়ায় আবর্তিত হয় নিজের অজান্তেই। এক্ষেত্রে কারো কোন হাত থাকেনা। কারও কিছু করার থাকেনা।
    জামান স্যারের সাথে ডায়াসে উঠে গুটিসুটি মেরে দাঁড়ায় নেহা। প্রথম দিনটি এখনো চোখে জ্বলজ্বল করে ভাসে শান্তনুর। ফর্সা মুখ লাল হয়ে গিয়েছিল নেহার। লজ্জা যেন লুকোতে পারছিলনা কিছুতে। পরিচয় করিয়ে দেন জামান স্যার।
    ‘ প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজ আমি একজন নতুন বন্ধুকে পরিচয় করিয়ে দেবো। ওর নাম নুরুন্নাহার। ডাক নাম নেহা। আজ থেকে আমাদের নতুন সহযাত্রী’’
    মুচকি হেসে হাত নাড়ে নেহা।‘ হাই ফ্রে-জ, আই এম ইওর নিউ ফ্রেন্ড। হোপ ইউ অল আর বি উইথ মি’। স্পষ্ট পশ্চিমা ইংরেজি উচ্চারনে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে নেহা। সবাই হাততালি দিয়ে স্বাগত জানায় নেহাকে। তারপর পুরো ক্লাসে আনমনে নেহার কথাই ভাবছিল শান্তনু। কেন জানে না। নেহা যে ইংরেজি উচ্চারনে এত ভালো তার সাথে না বুঝলে তার আসল রুপ অজানাই থেকে যেতো।
    আধুনিক অভিজাত পরিবারের সন্তান নেহা। স্টাইলিশ। কিন্তু ঐতিহ্য ছাড়েনি। পছন্দ তার রবীন্দ্রনাথ। খুব ভালো বাংলা উচ্চারণে আবৃতি করতে পারে। উৎসবে বাঙালি ঢঙে শাড়ি পরে হাতে কনুই পর্যন্ত চুড়ি পরে মেহেদি রাঙাতে পারে। খুব কাছে থেকে না মিশলে এসব অজানাই থেকে যেতো শান্তনুর।
    প্রথম দিন টিফিন পিরিয়ডেই নেহার মুখোমুখি দাড়ায় শান্তনু।
    ’ নেহা, আমি শান্তনু। পুরো নাম শফিকুল সামদানি শান্তনু।‘ হাত বাড়িয়ে দেয় নেহা।
    ‘ আমরা থাকি লেক পাড়ে। লেকভিউ এপার্টমেন্টে।‘
    ‘ ওহ তাই নাকি। আমরা থাকি ১৬/এ।আমার বাবার নাম নাজমুল ইমাম। সড়কের শেষ বাড়িটা আমাদের।‘ হাস্যোজ্বল নেহা।
    ‘ নাইস টু মিট ইউ ফ্রে-’ বলে হাত বাড়িয়ে দিতেই হই হই করে তেড়ে আসে রাশেদ ও মইনাক। ’’ এই মিস্টার ট্রানজিষ্টর। করো কি। করো কি। হাই। দিস ইজ রাশেদ। হ্যালো দিস ইজ মইনাক। নাইস টু মিট ইউ অলসো। কি বলো মিস্টার ট্রানজিষ্টর। হাহাহাহাহা।‘’
    মিস্টার ট্রানজিষ্টর এর মানে বোঝেনা নেহা। অকারনেই হাসিতে তাল মেলায়। একসংগে বেরিয়ে পড়ে ক্লাস শেষে।
    পাজেরো গাড়িতে কালো গ্লাসের আড়ালে ঢেকে চলে যায় নেহা। হাত নাড়ে শান্তনু। রিকশা খুঁজতে থাকে। সূর্য তখন পশ্চিমে গড়াতে শুরু করেছে। আজ মনটা বেশ ফুরফুরে। মইনাক আর রাশেদ মিলে রিকশা ঠিক করে। আকাশ জোড়া মেঘ। থেমে থেমে ছিটেফোটা বৃষ্টি।শীত শীত ভাব। আজ পুরো ধানমন্ডিটা একটা চক্কর দেবে তিন বন্ধু। সন্ধ্যার আগে রবীন্দ্র সরোবরে ফুচকা খেয়ে তারপর বাসায় ফিরবে।
ধানমন্ডির সাতাশ নাম্বার থেকে রিকশার চাকা গড়াতে থাকে। মইনাক রিকশার হুডের ওপর পা ছড়িয়ে বসেছে। শান্তনু আর রাশেদ সিটে। চিরচেনা যানজট। টুংটাং বেল বাজিয়ে চলে রিকশা। শান্তনুর মন পড়ে থাকে সেই বৃষ্টি ভেজা বারান্দায়। যে মুহুর্তটা নাড়িয়ে দিয়ে গেছে তার কচি মনের গোপন দরজা। সেই দরজায় কে দাঁড়াবে কে জানে ? হই চই এ মেতে ওঠে মইনাক আর রাশেদ। শান্তনু তলিয়ে যেতে থাকে ভালোলাগার অতল এক অদ্ভুত রাজ্যে। যেখানে গাছে গাছে, ফুলে ফুলে শুধু নেহার মুখচ্ছবি। আর কিছু নেই সেখানে।

অামার অস্তিত্বে, আমার ভাবনায়, আমার কল্পলোকের যে রাজ্য- সেখানকার আলোয়, বাতাসে, সেখানকার বর্নিল আকাশ, নিজের মত করে বানিয়ে নেয়া ঘর, ঘরের জানালায়, লতায় গুল্মে- লিখে রেখেছি
বলে গেছি নিজের সঙ্গে নিজের কথাগুলি, স্মৃতি নামের একজন বন্ধু লিখে যায় প্রত্যেকটা অনুসেকেন্ড- মস্তিস্কের কোষে কোষে পুঁতে যায় অডিও ভিজ্যুয়াল রেকর্ডের বীজ।
একবার ভেবে দেখো, চোখ বুঁজে হৃদয়ের দরজা কবাড সব খুলে দাও-
ধরো তোমার ভেতর একটা ডানা ঝাপটানো পাখি, দেয়ালে দেয়ালে মাথা ঠুকে, রাক্ষুসে ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় বিক্ষত হৃদয় নিয়ে মুমূর্ষু এক প্রাণ-
অতঃপর পাখিটাকে মুক্ত করো, ডানা ঝাপটে উড়ে বেড়াক, বুকে টেনে নিক একান্ত আকাশ
ছায়াঘেরা বৃক্ষের সবুজ কোমল ঠোঁট থেকে শুষে নিক বিশুদ্ধ অক্সিজেন,
ধরো- এ এক অন্য পৃথিবী, যা ভাবা যায়না, দেখা যায়না, ছোঁয়া যায়না
শুধু অনূভবে অনুরণন, শুধু প্রলম্বিত মুক্তির গান, নিঝুম রাতের বিরহী বাঁশির মত টেনে নিয়ে যায় বুকের অর্ধেকটা।
২৬/০৫/১৭

Thursday, May 23, 2019

একটা ছোটগল্প লিখে ৫০ হাজার টাকা আয় !! এই সেই ৫০ হাজার টাকার গল্পের নাটক দিব্যদৃষ্টি।


একটা ছোটগল্প লিখে ৫০ হাজার টাকা!১ হ্যাঁ। এটা ৫০ হাজার টাকার গল্প।
গল্পটি থেকে ঈদের নাটক বানিয়েছিল ফেয়ার এল্ড লাভলী ও বৈশাখী টিভি। ২০১৩ সালের ঈদে প্রচারিত নাটকটির নাট্যরুপ ও পরিচালনা করেছিলেন মাতিয়া বানু শুকু আপা।
Bangla Romantic Natok   Debbo Dristy , Story- Rakibul Islam Mukul
https://www.youtube.com/watch?v=spkrlWaDscM

Tuesday, May 21, 2019

ধারাবাহিক কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-৬

(ছয়)
রাত সাড়ে ৩টা। আমেরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যাণ্ডোর ডিজনি ওয়াল্ড রিসোর্ট। ১৭ তলার বড়সড় একটা রুম। দুটো বিছানা। ডিম লাইটের আবছা আলো। একটা টেবিল। ওয়ারড্রোব। জানালায় বেশ ভারি পর্দা। জোছনা রাত। জানালার গ্লাস সরানো। মৃদু বাতাসে কেঁপে উঠছে পর্দা। শীত শীত করছে শান্তনুর। এক বিছানায় জড়াজড়ি করে শুয়েছে তিন বন্ধু। পাশের বিছানা খালি। শীত শীত ভাবে হঠাৎ ঘুম ভাঙলো শান্তনুর। বিছানা ছেড়ে জানালার পাশে দাঁড়ালো। পর্দা আরও কিছুটা সরানো। অনেকটাই নির্জন আশপাশের এলাকা। জোছনা  আর রঙ বেরঙের আলোয় অদ্ভুত সুন্দর চারপাশ। এত রাতেও রাস্তায় ছুটে চলেছে শত শত গাড়ি। তবুও কোন শব্দ নেই। কান ফাটানো হর্ণ তো আমেরিকা আসার পর থেকে শোনেনি শান্তনু।

মইনাক আর রাশেদ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। পাশে গিয়ে বসলো শান্তনু। ঘুম আসছে না। মইনাক চশমা পরে। ওর চশমাটা পাশেই পড়ে আছে বিছানায়। আলতো করে নিয়ে টেবিলে রাখলো। ঢকঢক করে পানি খেল। ঘুমের যে কি হলো আজ। বাংলাদেশে এখন দিন। খুব ইচ্ছা করছে বাবার সঙ্গে কথা বলতে। কিছু ভালো লাগছে না। কেমন যেন টেনশন হচ্ছে সব কিছু মিলে। আর মাত্র দুদিন। এই দুদিন অরল্যা-ো ভ্রমন শেষে তারা ছুটবে শত কিলোমিটার দুরের টিটাসভিল শহরে।

ভালো লাগছিল না কিছু। ঘুম যেন নির্বাসনে। বুকের ভেতরটায় কেমন যেন করছিলো। নিউইয়র্কে আসার পর শর্মি খালা একটা সিমকার্ড আর মোবাইল ফোন দিয়েছেন। স্যামসাং এর বেশ দামি ফোন। টাচ স্ক্রিন। ঢাকা থেকে আসার সময় হাতব্যাগে যতœ করে নিয়েছে প্রিয় আইপ্যাড। গোলাম সামদানি সাহেব গত বছর সিঙ্গাপুরে কি একটা মেলায় গিয়ে ছেলের জন্য এনেছিলেন। বুকের ভেতরটায় ধুকপুক করছে শান্তনুর। উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সীমা নেই। কী হয় কী হয়। বেশ নার্ভাস লাগছে। নিজেই আবার নিজেকে অভয় দিচ্ছে। এত নার্ভাস হলে হবেনা শান্তনু। তোমাকে বিশ্ব জয় করতে হবে। নতুন কিছু করে সবাইকে তাক লাগাতে হবে। মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে রুম লাগোয়া বারান্দায় গেল শান্তনু। হাতে ছোট্ট নোট বুকটা। ফুল স্লিভ একটা পাতলা গেঞ্জি। আর থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। একহারা গড়ন শান্তনুর। চোখে পুরু চশমা। কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধা। বছর বছর বদলাতে হচ্ছে পাওয়ার।

বারান্দায় বেশ শীত শীত করছে। কাঁপুনি লাগছে হালকা। খারাপ লাগছে না। বারান্দায় টবে ক’টা ফুল গাছ। নাম জানেনা। কয়েকটা বাহারি ফুল সোডিয়াম আলোয় কেমন ম্যাটম্যাটে লাগছে। ছোট্ট একটা ইজি চেয়ার পাতা বারান্দায়। আকাশ জুড়ে মিটিমিটি জ্বলছে তারা। আবছা আলো অন্ধকার। দূরে ডিজনি ওয়ার্ল্ডের রাইডগুলো মৃত পড়ে আছে। চারদিকে শুনশান নীরবতা। নোটবুক হাতড়ে বাবার নাম্বার বের করলো শান্তনু।

‘হ্যালো... বাবা’
‘ কিরে ঘুমাসনি ?’
‘ঘুমিয়েছিলাম বাবা। হঠাৎ ঘুম ভাঙলো।’
‘কেন রে ? খুব টেনশন হচ্ছে বুঝি ? ’
‘জানি না বাবা, তবে কেমন যেন একটা অনুভূতি হচ্ছে..আচ্ছা বাবা খেয়েছো তো দুপুরে, নাকি ভুলে গেছ আবারও ? ’
কাশি দিলেন সামদানি সাহেব।
‘ওহ আমি এলাম তিনদিন। এর মধ্যে কাশিটাও বাধিয়েছো। বাহ, একদম অনিয়ম চলবে না বাবা। ’
অট্টহাসি সামদানি সাহেবের। ‘ হাহাহা, পাগল ছেলে। ঘুমাতে যাও। আমি ঠিক আছি। অপেক্ষায় আছি তোমার মিশনের ফলাফল জানার।  এসপার নয় ওসপার। সব কিছু জেনে বুঝেই কিন্তু রাজি হয়েছি। সো.. একদম টেনশন করো না। দেখো তুমি পারবে। আই এম কনফিডেন্ট। বেষ্ট অব লাক মাই সান। ’’
‘ওকে বাবা রাখলাম । ’

ফোন রেখে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষন ইজি চেয়ারে দুলুনি খেলো শান্তনু। মনটা কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না। সকাল ৮টায় বেরিয়ে পড়তে হবে। গন্তব্য ডিজনি ওয়ার্ল্ড। কিন্তু ঘুম আসছে না। রাতে ভালো ঘুম না হলে সকালে খারাপ লাগবে। কোন কাজও নেই। চোখ বন্ধ। হঠাৎ মনে হলো ‘ আচ্ছা পরিকল্পনাটা একা একা ঝালিয়ে নিলে কেমন হয়।’

যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। রুমে ঢোকার আগে ফ্রন্ট ডেস্কে জেনে নিয়েছিল এই হোটেলে ওয়াইফাই সংযোগ আছে কি না। পাসওয়ার্ডটাও টুকে রেখেছে রুম নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে। উঠে সোজা রুমে। হাতব্যাগ থেকে আইপ্যাড বের করে ওয়াইফাই কানেক্ট করলো। যদিও ঢাকা থেকে প্রাথমিক পরিকল্পনা সেরে এসেছে। খালি বিছানায় গা এলিয়ে আইপ্যাড এ নিমগ্ন শান্তনু। গুগল এ সার্চ দিল নাসা লিখে। হাজার হাজার রেজাল্ট। প্রাথমিক কিছু তথ্য টুকে রাখলো নতুন করে নোটপ্যাডে।

নাসা (Nasa) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এর সম্পূর্ণ নাম National Aeronautics and Space Administration। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার সদর দফতর ওয়াাশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। পূর্বতন নাকা (ন্যাশনাল অ্যাডভাজরি কমিটি ফর অ্যারোনটিক্স) বিলুপ্ত হয়ে ১৯৫৮ সালের ২৯ জুলাই ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাক্ট অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় নাসা। মার্কিন মহাকাশ যাত্রায় এই প্রতিষ্ঠানে ভূমিকা অ্যাপোলো চন্দ্রযাত্রা, স্কাইল্যাব মহাকাশ স্টেশন ও স্পেস শাটল ইত্যাদিতে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে।

শান্তুনু এসেছে ফ্লোরিডায়। নাসা ফ্লোরিডা লিখে সার্চ দিল আবার। হাজারো ওয়েব পেজ বেরিয়ে এল অনুসন্ধান পাতায়। নোট নিল যতœ করে। নাসা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন প্রকল্পের সাথে যুক্ত ৫টি সংস্থার একটি। এর মধ্যে ফ্লোরিডায় নাসার জন এফ কেনেডি স্পেস সেন্টারটি অবস্থিত। জন এফ কেনেডি স্পেস সেন্টারটি ফ্লোরিডার টিটাসভিল (ঞরঃঁংারষষব) শহরের পাশে আটলান্টিক উপকূলে মেরিট আইল্যান্ড (গবৎৎরঃঃ ওংষধহফ) নামক একটি দ্বীপে অবস্থিত। এই স্পেস সেন্টার থেকে নাসার নভোযান উৎক্ষেপণ করা হয়ে থাকে। নভোযান উৎক্ষেপনের সব সুবিধা এখানে রয়েছে। এখানে একটি দর্শনার্থী কেন্দ্র এবং স্পেস সেন্টারের মূল অংশে বাস ভ্রমণের ব্যবস্থা রয়েছে। যা ফ্লোরিডা ভ্রমণে আসা প্রচুর পযর্টককে এ স্থানটি দর্শনে আকৃষ্ট করছে।

নাসা সংক্রান্ত প্রাথমিক বেশ কিছু তথ্য উপাত্ত খুঁজে নোট বুকে তা টুকে রাখলো শান্তনু। ঘড়িতে তখন ভোর ৫টা। চোখে কিছুটা ঘুমের ছায়া খেলা করতে লাগলো। হাই উঠছে ঘন ঘন। মইনাক ও রাশেদ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।  ফোনে সকাল ৭টায় এলার্ম দিয়ে জড়াজড়ি দুই বন্ধুর পাশে কোনমতে শুয়ে পড়লো শান্তনু। পাশে পড়ে থাকলো খালি বিছানা। একটা কলম। নোটপ্যাড। রাজ্যের যতো ঘুম যেন এসে ভর করলো শান্তনুর ওপর। খুব বেশি ক্লান্ত। পরিশ্রান্ত। শোবার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমের অতলে হারিয়ে গেল শান্তনু।
)

Sunday, May 19, 2019

মহাজগত থেকে আসা রহস্যজনক বেতার তরঙ্গ শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা

অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, দুইটি নিউট্রন স্টার কাছাকাছি ঘুরতে থাকলে বা মিশে গেলে মহাজাগতিক সংকেতের তৈরি হয়




মহাজগতের বহুদূরের একটি ছায়াপথ থেকে আসা রহস্যজনক সংকেত পাওয়ার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ক্যানাডার একটি টেলিস্কোপে ওই সংকেত ধরা পড়েছে।
তবে সংকেতের অর্থ বা কোথা থেকে সেটি আসছে, তা এখনো বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেননি।
এর মধ্যে ১৩টি দ্রুত গতির বিস্ফোরণের মতো বেতার শব্দ রয়েছে, যেটি বারবার ঘুরে ঘুরে আসছে। যেটিকে এফআরবি বলে বিজ্ঞানীরা বর্ণনা করছেন। এই শব্দটি প্রায় দেড় হাজার আলোকবর্ষ দূরের কোন উৎস থেকে আসছে।
এ ধরণের ঘটনা অতীতে আরো একবার ঘটেছে, সেটি আরেকটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল।
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইনগ্রিড স্টেয়ারর্স বলছেন, ''এটা জানার পর আরো একবার এই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, মহাবিশ্বের অন্য কোথাও কিছু রয়েছে।''
''এ ধরণের শব্দ আরো পাওয়া গেছে এবং গবেষণার জন্য আরো উৎসের সন্ধান মিললে, আমরা হয়তো এই সৃষ্টি সংক্রান্ত রহস্য বুঝতে শুরু করবো- এটি কোথা থেকে আসছে আর কি কারণে সেটির উৎপন্ন হচ্ছে।''
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ওকানাগান উপত্যকায় চারটি একশো মিটার লম্বা অ্যান্টেনা নিয়ে শাইমি গবেষণাগারটি অবস্থিত, যেখানে এই সংকেত ধরা পড়েছে। এই গবেষণাগার থেকে প্রতিদিন আকাশে অনুসন্ধান চালানো হয়।
গত বছর এই টেলিস্কোপটি কাজ শুরু করার পর মহাবিশ্বের ১৩টি মহাজাগতিক বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছে, যার মধ্যে একটি কয়েকবার ফিরে ফিরে এসেছে।
সূত্র: বিবিসি

Saturday, May 18, 2019

মাত্র ২ ঘন্টায় ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক!! আসছে হাইপারসনিক বিমান।

ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক। বিমানপথে মোট দূরত্ব ৭৭০০ মাইল। হাল জমানার যাত্রীবাহী বিমানে এই পথ পাড়ি দিতে যাত্রাবিরতি ও কানেকটিং ফ্লাইট মিলিয়ে সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘন্টা। কোন কোন সময় তারও বেশি। কিন্তু ভেবে দেখুন তো, আপনার বন্ধু মিরপুর থেকে মতিঝিল যেতে দু’ঘন্টা গলদঘর্ম হয়ে যখন কারওয়ানবাজারের জ্যামে হাঁসফাস করছে- ঠিক একই সময়ে আপনি ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক পৌঁছে গেছেন। 
ভাবনা নয়, এটি সত্যির খুব কাছাকাছি। কারন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'হারমিউস করপ.' এই বিস্ময়কর উদ্ভাবনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।  গেলো সপ্তাহে প্রাথমিক পুঁজি সংগ্রহের চেষ্টায় সফল হয়ে আকাশযাত্রায় নতুন এই সম্ভাবনার কথা জানান দিলো  প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিক হিসেবে তাদের তৈরি হাইপারসনিক বিমান ছুটবে শব্দের থেকে অন্তত পাঁচ গুন বেশি গতিতে।যার গতি হবে ঘন্টায় অন্তত ৩৮০০ মাইল।
যদিও বুম এবং এরিয়ন নামের আলাদা দুটি কোম্পানি এরই মধ্যে ২০২২ সাল থেকে অন্তত ঘন্টায় ১ হাজার মাইল গতিবেগের সুপারসনিক বিমানের মাধ্যমে যাত্রীসেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল। প্রায় ১৬ বছর আগে কনকর্ড নামের সুপারসনিক বিমানের সেবা বন্ধ করা হয়
। যার গতি ছিল ঘন্টায় প্রায় ৭০০ মাইল। কনকর্ড ১৯৭৬ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত যাত্রীসেবা দিয়েছে। 
এখন প্রশ্ন হলো কবে আসছে নতুন এই উড়োজাহাজ? দিনক্ষণ চুড়ান্ত হয়নি। তবে আসছে এটি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির উদ্যোক্তারা। এরই মধ্যে বিমানটির ইঞ্জিনের তাপ সহন ক্ষমতাও পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় হাইপারসনিক ইঞ্জিনের তাপমাত্রা ১৮০০ ড্রিগ্রী ফারেনহাইট হয়, যে তাপমাত্রায় বেশিরভাগ ধাতু গলে যায়। কিন্তু বিশেষ প্রি কুলিং সিস্টেম চালু করায় সফলভাবেই ওই উচ্চ তাপমাত্রায় চালু করা সম্বব হয়েছে হাইপারসনিক ইঞ্জিন। 

সূত্র: এনবিসি নিউজ। 


ধারাবাহিক কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-৫



(পাঁচ)
টানা পাঁচ বছরের গবেষণায় উচ্চমাত্রার শব্দ তরঙ্গ রুপান্তরের মডুলেটর ডিজাইন করতে পেরেছে শান্তনু। এইতো মাস ছয়েক আগে। কিন্তু এগুলো মানুষ সৃষ্ট বিভিন্ন যন্ত্র থেকে উৎপন্ন শব্দ। আসল পরীক্ষা বহুদুরে। পেতে হবে ভিন গ্রহের কোন অজানা প্রাণীর শব্দ। সেই যে স্বপ্নে এল, তারপর বাস্তবে তো ধরা দিল না। শুধু কানে ভাসে ‘চি হি হি চি চি শো শো পো’।
গবেষনার চুড়ান্ত পর্যায়ে শান্তনু সঙ্গে নিয়েছে মইনাক ও রাশেদকে। উৎসাহ যুগিয়েছেন সামদানি সাহেব। লেকের পাশের শোবার ঘরটায় চলেছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। ওই ঘরেই ল্যাবরেটরি বানানো হয়েছে। বরাবরের মতোই কছিমউদ্দিন দাদু গবেষনার গিনিপিগ। তিনি উচ্চ স্বরে শব্দ করবেন ‘চি হি হি চি চি শো শো পো’। সেই শব্দ নেয়া হলো রিসিভারে। তারপর তা ছুঁড়ে দিল ট্রান্সমিটার। অন্য ঘরে বসে শান্তনু রিসিভারে সেই শব্দ রুপান্তরের খেলায় মেতেছে।
সামদানি সাহেবের বেশ উচ্চ ধারনা ছেলেকে নিয়ে। তিনি স্বপ্ন দেখেন এই ছোট্ট শান্তনু ঠিক একদিন বিশ্ব জয় করবে। পেটেন্ট হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে তাই চুড়ান্ত পরীক্ষার আগে কোনভাবেই এই চারজনের বাইরে প্রজেক্টটির ধারনা ফাঁস করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা। প্রজেক্টের সবচেয়ে বড় সাফল্য যে কোন হাই ফ্রিকোন্সেরি শব্দকে রুপান্তর করা যায়। আর এই রুপান্তরের পরে তা রিসিভারে শোনা যায় মাতৃভাষা বাংলায়। মডুলেটর আবিস্কারের পর কতো রাত যে খালি গায়ে ছাদে শুয়ে এলিয়েনের অপেক্ষায় থেকেছে তার অন্ত নেই। এলিয়েন আসেনা।
প্রজেক্টটির সবচেয়ে বড় অসুবিধা খুঁজে বের করেছেন সামদানি সাহেব। এই মডুলেটর এত বেশি উচ্চমাত্রার শব্দ গ্রহন ও তা রুপান্তর করতে পারে, তা বিশেষায়িত কিছু যন্ত্র ছাড়া উৎপন্ন করা সম্ভব না। তবে ভিন্ন গ্রহের কোন প্রাণী অথবা ভিন্ন কোন গ্যালাক্সির উচ্চ মাত্রার শব্দ পেলে তা খুব সহজেই রুপান্তর করে বাংলায় শোনা সম্ভব। সবচেয়ে বড় অসুবিধা যে ট্রান্সমিটার এবং একটি রিসিভার সমৃদ্ধ ডিভাইসটি মহাকাশে পাঠাতে হবে। কিন্তু সে সুযোগ কোথায় ? রকেট বানানো অথবা রকেটের অর্থের যোগান দেয়া শান্তনুদের কাছে কল্পনাতীত।
মধ্যরাতে ছাদে খালি গায়ে ছেলের পাশে শুয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন সামদানি সাহেব।
‘‘ বুঝেছিস শান্তনু, তুই যে এত্ত বড় একটা যুগান্তকারী আবিস্কার করলি। এখন এটা বাস্তবায়নের জন্য তো তার চেয়েও অনেক বড় কিছু বানাতে হবে। হাহাহাহাহা ’’
শান্তনুর সরল উত্তর ‘ কী বানাতে হবে বলো বাবা দেখবা ঠিক বানায়া ফেলছি ’’।
ছেলের সরল উত্তরে মুগ্ধ শান্তনু সাহেব। হাসেন।
‘‘ বোকা ছেলে। ধরে এখন যদি আমাদের একটা প্রাইভেট রকেট থাকতো তাহলে বাপ বেটা মিলে এই ট্রান্সমিটার আর রিসিভার পাঠাতাম  আরেকটি রিসিভার থাকতো আমাদের কাছে। তা কি আর সম্ভব বেটা ? ’’
‘‘ সম্ভব বাবা। মানুষের ইচ্ছাশক্তির কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই বাবা। দেখো আমরা ঠিক একদিন রকেট পাঠাবো আকাশে। তারপর যুগান্তকারী আবিস্কারে বদলে দেবো প্রচলিত সব ধারনা’’। প্রত্যয়ী উত্তর শান্তনুর।
‘‘ সাবাশ বেটা। ঠিক বড়দের মতো করে কথা বললি। দোয়া করি তুই আসমানে পৌঁছে যা। ভেঙে ফেল সব পুরনো ধ্যান ধারনা। অনেক বড় হও বাবা।’’
আবেগে বুকে জড়িয়ে নেন শান্তনুকে। ঠিক এভাবে কতো রাত বুকে আগলে রেখেছিল মা। মা আজ নেই। শান্তনুর অনেক মন খারাপ লাগতে থাকে। বাবার বুকে মুখ লুকিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠে শান্তনু। বুঝতে পারেন সামদানি সাহেব। তিনিও ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন।
রাত গভীর হতে থাকে। পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ে অর্ধেকটা চাঁদ। মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে থাকে। আধো আলো , আধো অন্ধকারে দু’চোখে অবিরাম জল গড়াতে থাকে বাবা ছেলের। শনশনে বাতাস আসে। ফোটা ফোটা বৃষ্টি ছুঁয়ে দিতে থাকে দুজনের অনাবৃত পিঠ। ঝপ করে নেমে আসে বৃষ্টি। কাঁদতে থাকেন সামদানি সাহেব। কাঁদে শান্তনু। তার চেয়ে বড় বেশি কান্না নিয়ে শেষ রাতের পৃথিবীতে নেমে আসে মেঘেদের দল। আজ যেন আকাশেরও মন খারাপ। ভিজতে থাকে বাবা ছেলে। ছেলেকে আরও শক্ত করে বুকে টেনে নেন সামদানি সাহেব।
অসময়ের বৃষ্টি মানুষকে আবেগপ্রবণ করে তোলে। নষ্টালজিয়া গ্রাস করে। ফিরিয়ে নিয়ে যায় ছোটবেলায়। মামাবাড়ির আমবাগান। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। বাড়ির পেছনের টইটুম্বুর বিল। বিলের পানিতে জলের ফোটা ঝমঝম করে আছড়ে পড়ে। বড়শি হাতে আধাভেজা দুপুর। বিকেল। কতো সময়। পেছনে চলে যায় কতো বর্ষন মূখর সন্ধ্যা। ফিরে আসেনা আর। এই ধানম-ির লেকভিউ এপার্টমেন্টের বারান্দাতেও কতো বর্ষায় কৃষ্ণচুড়ার রঙে হারিয়েছেন সামদানি সাহ্বে। সাথে প্রয়াত স্ত্রী শাহানারা বেগম। রিম ঝিম বৃষ্টি। মুড়ি মাখানো। বেশি বেশি পেঁয়াজ। কাঁচা মরিচ। বাড়ি থেকে আসা ঘানিতে মাড়ানো খাঁটি সরিষার তেল। আহা। আর কি কখনো আসবে সেই দিন। আসেনা।
আবেগে তলিয়ে যেতে থাকেন সামদানি সাহেব। গলা খুলে গাইতে থাকেন। কণ্ঠ মেলায় শান্তনুও। অকাল বর্ষন ভিজিয়ে দেয় পিতা পুত্রের ভেতর বাহির। দুরে ল্যাম্পপোষ্টের ঠিক নিচে ঝরে পড়তে থাকে সারি সারি বৃষ্টি। পূবাকাশ ফর্সা হয়ে আসে। গভীর ঘুমে অচেতন নগরী। জেগে থাকেন সামদানি সাহেব আর শান্তনু। ধানম-ির লেক ভিউ এপার্টমেন্টের ছাদে বৃষ্টি বিলাসে মেতে ওঠেন। হারিয়ে যান আবেগের অতলে। ছেলের কাঁধ জড়িয়ে ছাদের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে হাঁটেন সামদানি সাহেব। গলা ছেড়ে গাইতে থাকেন।
আজি   ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে
জানি নে,   জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না ॥
এই   চঞ্চল সজল পবন-বেগে  উদ্ভ্রান্ত মেঘে   মন চায়
মন চায়   ওই বলাকার পথখানি নিতে চিনে॥
মেঘমল্লার সারা দিনমান।
বাজে ঝরনার গান।
মন হারাবার আজি বেলা,   পথ ভুলিবার খেলা-- মন চায়
মন চায়  হৃদয় জড়াতে কার চিরঋণে॥

Friday, May 17, 2019

ধরাবাহিক কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-৪

(চার)
আকাশ বড় প্রিয় শান্তনুর। গোলাম সামদানি সাহেবও আকাশ প্রেমী। বাতাসে ইথার তরঙ্গ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেন শব্দ, গান- কথামালা। এই ইথার আকাশে পাঠান। কি এক অদ্ভুত কম্পমান তরঙ্গ। ওঠানামা করে। তরঙ্গ নিয়ে খেলা করেন। মেগা হার্টজ, কিলো হার্টজ এ বন্দি করে বাতাসে ছুঁড়ে দেন শব্দ মালা। অন্ধকার রাতে শীতলপাটি নিয়ে ছুটে যান ছাদে। বাবা ছেলে মিলে চিৎ হয়ে শুয়ে বুক মেলে দেন আকাশে। অন্ধকারে দু’জোড়া চোখ খুঁজে বেড়ায় ধুমকেতু, নীহারিকা বা দূরের কোন নক্ষত্র। খালি গায়ে ছাদে শুয়ে ছেলেকে শেখান তাদের নাম। সাত ভাই চম্পার গল্প শোনান। শোনান শুকতারা আর ধ্রুবতারার গল্প। সেই সিক্স গ্রেড থেকে তাই আকাশপ্রেমী হয়ে ওঠে শান্তনু।
বাবা অফিসের কাজে বাইরে গেলে রাতে একা ছাদে শুয়ে আকাশ দেখে। ভেসে বেড়ায় কল্পনার জগতে। যে জগতে গিজগিজ করে ইলেকট্রনিক্স, ইথার তরঙ্গ, গ্যালাক্সি, নক্ষত্র সব কিছুই। অদৃশ্য শব্দ আর তরঙ্গমালা এসে ধরা দেয় কানে। মানুষের শ্রবণক্ষম যে শব্দ তার চেয়ে হাজার গুন বেশি শব্দ নিয়ে ভাবতে থাকে চোখ বন্ধ করে। আঁকতে থাকে স্বপ্নের ডায়াগ্রাম। বাতাসে আঙুলকে কলম বানিয়ে চলতে থাকে জটিল সব হিসেব নিকেষ। যে গণিতে হাজার কোটি কিলোমিটার পথেও বাতাস ছাড়া বিচ্ছিন্ন হবেনা যোগাযোগ। থাকবে রিমোট কন্ট্রোল সুবিধা। খালি গায়ে শুয়ে কল্পনায় ছবি আঁকে দুরের অদৃশ্য কোন গ্যালাক্সির। কখনো ঘুমিয়ে পড়ে শীতলপাটিতে। স্বপ্ন দেখে। আলোর বেগে ছুটে আসে বেশ কিছু মহাকাশযান।
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ঢাকা। উড়ন্ত একটি শাদা আগুনের গোলক ছুটে আসে শান্তনুদের ছাদে। তীব্র আলোয় চোখ ধাধিয়ে যায় শান্তনুর। ছোট হয়ে আসে চোখ। আগুনের গোলকের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে দুটো কিম্ভুত কিমাকার প্রাণী। বিচিত্র সব শব্দ তরঙ্গ ছুড়ে দেয় ঢাকার বাতাসে। কিছুই বুঝতে পারেনা শান্তনু। চি হি হি চি চি শো শো পো.... এমন অনুভূতি হতে থাকে কানে। যেন পর্দা ফেটে ঢুকে যাবে শব্দ তরঙ্গ। সামদানি সাহেব থাকলে হয়তো মেপে দেখার চেষ্টা করতেন কতো কিলোহার্টজ বা মেগাহার্টজে উৎপন্ন হচ্ছে শব্দগুলো। হয়তো বা শর্ট ওয়েভ বা মাইক্রো ওয়েভে ছড়ানো হচ্ছে, তাও তিনি খুঁজে দেখার চেষ্টা করতেন। কিছুই বুঝতে পারেনা শান্তনু। হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে। প্রাণীদুটো আবার মিলিয়ে যায় আগুনের গোলকে। হাত নাড়ে। বোকার মতো ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে শান্তনু। চোখের পলকে মিশে যায় বিশালাকায় আগুনের গোলকটি।
তখনও শান্তনুর কানে বাজতে থাকে চি হি হি চি চি শো শো পো। এর কোন মানে বুঝতে পারেনা। বোঝা সম্ভব নয় হয়তো যে কোন মানুষের পক্ষে। শান্তনুর মাথায় প্রশ্ন খেলে যায়। আচ্ছা পৃথিবীতে এখনো পর্যন্ত কি কোন সাউ- মডুলেটর আবিস্কৃত হয়েছে যার মাধ্যমে এই তরঙ্গ রুপান্তর ঘটিয়ে মানুষের শ্রবণযোগ্য করা যায়। এমন কি কোন যন্ত্র আছে যার মাধ্যমে এই অতিপ্রাকৃত শব্দ মানুষের বোধগম্য করা যায় ?
ঘুমের ঘোরেই ছুটে বাসায় ফিরে যায় শান্তনু। বসে যায় উইকিপিডিয়া আর গুগল অনুসন্ধানে। সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ দেয় ‘চি হি হি চি চি শো শো পো’ লিখে। এক হাজার সাতষট্টিটি অনুসন্ধান পেইজ বেরিয়ে আসে। কিন্তু কোনটিতেই তেমন যুতসই কোন তথ্য পায়না শান্তনু। তার মনে হতে থাকে, আসলে এ ধরনের উচ্চ তরঙ্গের শব্দ রুপান্তরে কোন সিমুলেটর বা মডুলেটর আবিস্কৃত হয়নি আজও। যদি তা হতো তাহলে খুব সহজেই বোঝা যেত ভিন গ্রহের প্রাণীদের ভাষা। হয়তো ওই দুজন কিছু একটা বলতে চেয়েছে শান্তনুকে। কিন্তু শান্তনুর মানব মস্তিস্কের এ্যান্টেনায় তা কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি। শুধু কানে বেজেছে উচ্চমাত্রার কটা শব্দ ‘চি হি হি চি চি শো শো পো’।
নতুন কিছু একটা করার ভুত চাপে শান্তনুর মাথায়। শব্দ তরঙ্গ রুপান্তরের খেলায় মেতে ওঠে দিন রাত। কি করে রুপান্তর ঘটানো যায় অতি প্রাকৃত এই শব্দ তরঙ্গের। যা উদঘাটনে হয়তো বেরিয়ে আসবে এই মহাবিশ্বের অপার রহস্যের খ-িত কিছু অংশ। নাওয়া খাওয়া ভুলে মডুলেটর তৈরিতে নেমে পড়ে শান্তনু। এই স্বপ্ন যে তাকে সফল করতেই হবে।


Tuesday, May 14, 2019

কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-৩

কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-৩


শান্তনুর বাবা গোলাম সামদানি। ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার। চাকুরি করেন বেসরকারি একটা রেডিওতে। পদ চিফ অব ব্রডকাস্ট অপারেশন। শান্তনুর ভাই বোন নেই। একা। গত বছর মা মারা গেছেন ক্যান্সারে। সামদানি সাহেব ভালো মানুষ। সদালাপী। বন্ধুবৎসল। বেশিরভাগ সময় অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকেন। ছোটবেলা থেকেই বাবার ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশের প্রেমে পড়ে শান্তনু। ধানম-িতে বাসা। লেকের পাড়ে নিরিবিলি যে এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স, তার চার তলায়। লেকভিউ এপার্টমেন্ট। অনেক দিন অসুস্থ ছিলেন শান্তনুর মা। তখন থেকেই একাকীত্ব ভর করে শান্তনুর মগজে। স্কুলের অবসরে বসে যেত বাবার কিছু বই নিয়ে। যেগুলোর পাতায় পাতায় ইলেকট্রনিক্স পরিচিতি আর ডায়াগ্রাম। বিশেষ করে লেভেল সিক্সে পড়ার সময় মাথায় পোকা ঢোকে ইলেকট্রনিক্স এর। লেকের পাড় ঘেষে পাঁচতলা সমান রক্তরঙা কৃষ্ণচুড়ার ফাক দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে কতো বিকেল বা সন্ধ্যা কেটেছে বারান্দায়। তবে বেশিরভাগ সময়টা কেটেছে বাবার কম্পিউটারে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স এবং এস্ট্রোনমিক্যাল বা মহাকাশবিদ্যার ওয়েবসাইটে ঢু মেরে।
শান্তনু অন্যরকম মেধাবী। লেভেল সিক্সেই ও শিখে ফেলেছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং জাভা, সি++ আর ওরাকল। শিখেছে ওয়েব পেইজ ডিজাইনের টুকটাক কাজও। কম্পিউটার আর ইলেকট্্রনিক্স যেন ধ্যান জ্ঞান। অবশ্য এতে সামদানি সাহেবের অবদান কম নয়। কাজের অবসরে বাকি সময়টুকু ব্যয় করেন শান্তনুর পেছনেই। সমর্থন দেন। উৎসাহ যোগান। বিশেষ করে মা মারা যাওয়ার পর বড় একা হয়ে যায় শান্তনু। তখন থেকে গ্রামের দুসম্পর্কের এক দাদু কছিম উদ্দিন এসে থাকেন বাসায়। ফুট ফরমাশ খাটেন। বাজার করেন। বাসায় আরেকজন সদস্য আছেন। আছিয়া খালা। কাজের বুয়া হিসেবে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। রান্না করেন। ঘর দোর মোছেন। আর শান্তনু বেশিরভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডায়াগ্রাম নিয়ে।
জন্মের সময় বেশ জটিলতা দেখা দিয়েছিল শান্তনুর। মা ছিলেন মৃত্যু শয্যায়। একলামসিয়া হয়েছিল। তখন থেকেই শান্তনু একটু অন্যরকম। আর দশটা শিশুর মতো নয় তার আচরণ। তার মেধা অসাধারণ। ডাক্টারও দেখিয়েছেন সামদানি সাহেব। তারা এই লক্ষনগুলোকে অটিস্টিক শিশুদের গুনাবলীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে চেয়েছেন। মা এ নিয়ে অনেক সময় মন খারাপ করে থাকতেন। বুঝতে দিতেন না। শান্তনু সাধারণ পড়াশোনায় খুব একটা ভালো না। কিন্তু বিজ্ঞান, বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স আর অ্যাস্ট্রোনমিতে এক কথায় অসাধারণ। যেন প্রকৃতি তাকে এসব বিষয় শিখিয়ে মায়ের কোলে পাঠিয়েছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছেন সামদানি সাহেব। তাই ছোটবেলা থেকেই এসব বিষয়ে তাকে আরও উৎসাহ যুগিয়েছেন। শান্তনুও ডুবে থাকতো এসবের মধ্যেই। যেন নিজস্ব একটা ইলেকট্রনিক্স এর জগৎ তৈরি করে নিয়েছে সে নিজের ভেতর।
এমন অনেক দিন গেছে ডায়াগ্রামে ডুবে আছে। আছিয়া খালাকে দুধ হাতে দাঁড় করিয়ে রেখেছে এক ঘন্টা। ডায়াগ্রামের জটিল অংক মিলিয়ে তারপর হাতে নিয়েছে দুধের গ্লাস। কছিম উদ্দিন দাদু তো রীতিমত অতিষ্ঠ এই ইলেকট্রনিক্স প্রীতি নিয়ে। নতুন কোন ডায়াগ্রামের গিনিপিগ কছিম উদ্দিন। তার ওপরেই প্রথম পরীক্ষা চলে। একবার কি একটা ডায়াগ্রাম বানালো। যে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র দিয়ে ধেড়ে ইদুর শিকার করা যায়। কছিম উদ্দিনের ওপর চললো পরীক্ষা। তার কেনে আঙুল আটকে গেল যন্ত্রে। তিনি সেটি নিয়ে ছুটে বেড়ালেন পুরো বাড়ি। চিৎকার করে পাড়া জানান দিলেন। শান্তনু এ ঘটনায় হেসে কুটি কুটি। এ যেন ইলেকট্রনিক্স দুনিয়ার সঙ্গে ভালোবাসার মেলবন্ধন।
সামদানি সাহেবও  যতোটা সম্ভব চেষ্টা করেন শান্তনুকে মায়ের অভাব বুঝতে না দিতে। তাইতো সময়ে অসময়ে ছুটে আসেন বাসায়। ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কাছের কোন ফুড কোর্ট বা শপিংমলে। হাসি আনন্দে ভরিয়ে রাখার চেষ্টা করেন শান্তনুর ছোট্ট জীবন। তবুও কী যেন নেই শান্তনুর। বাবার অনুপস্থিতিতে মায়ের ছবি বুকে জড়িয়ে হু হু করে কাঁদে। বিছানায় গড়াগড়ি খায় আর ডাকতে থাকে ‘‘ মা... মা ও মা ...একবার আসো না মা..’’। বালিশ ভেজায়। দরজার আড়ালে আঁচলে দাঁত খুটে ফুপিয়ে কাদেন আছিয়া খালা। দীর্ঘশ্বাস ভারি হয় ধানমণ্ডির এই স্বপ্ন গৃহে।

(তিন)

Sunday, May 12, 2019

ধারাবাহিক কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব-২

স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান, পর্ব- দুই


লাগার্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। হার্ডসন নদীর শান্ত জলের কূল ঘেষে দাঁড়ানো অপেক্ষাকৃত ছোট কিন্তু ব্যস্ততম বিমানবন্দর। ওপাশে ম্যানহাটানের সারি সারি উঁচু ভবন। পানিতে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রমোদ তরী। ভাসমান হেলিকপ্টার জেটি। মালবাহী জাহাজ। ফিশিং বোট। বেলা ২টায় বহির্গমন লাউঞ্জে দল বেঁধে বসলো শান্তনুরা। গন্তব্য ফ্লোডিডা অঙ্গরাজ্যের অলল্যা-ো। অরল্যা-োর  বিমানবন্দরের নাম ডিজনি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। বাহন ডেল্টা এয়ারলাইন্স এর ডি-৩৫২। অপেক্ষাগারের চেয়ারে হেলান দিয়ে শান্তনু। বোর্ডিং পাসে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিল। নিউ ইয়র্ক থেকে অরল্যা-ো সাড়ে ৩ ঘন্টার বিমান ভ্রমণ। পথে টেনেসি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে আধা ঘন্টার যাত্রাবিরতি ও কানেকটিং ফ্লাইট। বেলা ৩টায় বিমানের দরজা খুললো। অপেক্ষাকৃত ছোট উড়োজাহাজ। হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ৫৪ সদস্যের অভিযাত্রী দলের বাইরে সাধারণ যাত্রী গোটা পঞ্চাশেক। আবারো জানালার পাশে শান্তনু। সিটে বসেই গা শিউরে উঠলো অজানা আশঙ্কায়। হাত ব্যাগটা খুলে ভালো করে দেখে নিল। নিরাপত্তা তল্লাশিতে ব্যাগ খুলে দেখেছে। সন্দেহ ছিল। কিন্তু নাহ, জিনিসটা ঠিকমতোই আছে।
ফ্লোরিডার এই ভ্রমন নিছক শিক্ষা সফর নয় শান্তনুর কাছে। গেল কয়েক বছর ধরেই পরিকল্পনা এঁটেছে এই মিশনের। এবার হয়তো সত্যি হয়ে ধরা দেবে তা। ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। উত্তেজনায় দম আটকে আসছে মাঝে মাঝে। ধরা পড়লে নির্ঘাত জেল। তোলপাড় সারা বিশ্বে। সবার চোখ এড়িয়ে কিভাবে মিশন শেষ করবে তার পুরো ছক আঁকা। স্টাডি ট্যুরের পরিকল্পনা হয়েছে তিন মাস আগে। এই তিন মাসেই পরিকল্পনা গুছিয়ে নিয়েছে শান্তনু, মইনাক ও রাশেদ। এখন শুধু তা বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
পুরো অভিযাত্রী দলে এই পরিকল্পনা জানে শুধু ওই তিনজনই। ধীরে ধীরে আকাশে ডানা মেললো ডেলটা এয়ারের বোয়িং বিমানটি। একহাতে ধরা মইনাক। অন্যহাতে রাশেদ। উড়ছে তারা। দ্রুত বেগে উঠে যাচ্ছে মধ্যাকর্ষন পেরিয়ে কোন এক অজানা গ্যালাক্সির দিকে। আশপাশে ছোট বড় নক্ষত্র। কয়েকটা রকেট শাঁই করে পাশ কাটিয়ে ছুটে গেল পেছন দিকে। মহাকাশ স্টেশনে কর্মব্যস্ত কয়েকজন নভোচারী হাত নেড়ে অভিনন্দন জানালো তিন ক্ষুদে অভিযাত্রীকে। ডানা মেলে খোলা আকাশে উড়ছে তিন বন্ধু। ওজনহীন চারপাশ। উদ্দেশ্য লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরের কোন অজানা গ্রহ, যেখানে আছে মানুষের মতো বুদ্ধিমান কোন প্রাণী। হয়তো মানুষের চেয়ে আরও বেশি। বিশাল আকারের একটা উল্কাপি- ছুটে আসছে। দ্রুত দুই বন্ধুকে হেঁচকা টানে কক্ষপথ থেকে দুরে সরিয়ে নিল শান্তনু। উড়ছে। উড়ছে।
অন্তিম আকাশ। যেন এ যাত্রার কোন শেষ নেই। চারপাশে বর্ণিল আলোকচ্ছটা। যেন এ যাত্রার কোন ক্ষয় নেই। অনন্ত অসীম এক পথে ছুটে চলেছে তিন বন্ধু। উল্কার বেগে। কখনো আলোর গতিকে পেছনে ফেলে। পাশ কাটিয়ে শাঁই শাঁই করে ছুটে যাচ্ছে ছোট বড় তারা। গ্যালাক্সি পেরিয়ে আরেক গ্যালাক্সি। ব্ল্যাক হোল পেরিয়ে আরেক ব্ল্যাক হোলে। দূরে- বহু দুরে। এ পথ হয়তো হাজার কোটি মাইলের। হঠাৎ কি হলো ! সূর্যের পাশ দিয়ে যেতেই গলে যেতে লাগলো ইস্পাত ও ভারি প্লাষ্টিকের তৈরি ডানা। ফুটো হয়ে গেল অক্সিজেন সিলি-ার। নিচে পড়তে শুরু করলো তিন বন্ধু। উল্কার মতো। শক্ত করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে প্রাণপন চিৎকার করছে। দরদর করে ঘামছে। বাঁচাও বাঁচাও আর্ত চিৎকার। তুমুল বেগে কাঁধ ঝাকাচ্ছিলো রাশেদ। পাশের সিটে বসা। বিমানের ১৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রাতেও ঘেমে ভিজে গেছে শান্তনু। স্বপ্ন দেখছিল। ঢকঢক করে পানি খেল।  ঘটনা বুঝতে পেরে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো রাশেদ আর মইনাক।
‘‘ তুই ওভাবে চেঁচাচ্ছিলি কেনো রে ? মিশন তো শুরুই হয়নি এখনো। ’’  কোন মতে দম আটকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল মইনাক।
বোকার হাসি হাসলো শান্তনু। স্বপ্নের কথা বললোনা কাউকে। তবু একটা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় ভারি হয়ে আছে মন। বন্ধুদের সঙ্গে হেসে নিজেকে হালকা করার চেষ্টা করছে শান্তনু। বিমান তখন ৩৫ হাজার ফুট ওপরে মেঘের সঙ্গে মিতালী পেতেছে। আর তো মাত্র কয়েক ঘন্টা। তার পরেই শুরু মিশন বিডি-০০৩। বিমান তখন অরল্যান্ডোর আকাশে। ককপিট থেকে ঘোষণা এলো অবতরণের।
‘‘ সম্মানিত যাত্রী বৃন্দ, আর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা অবতরণ করতে যাচ্ছি ডিজনি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে। আপনারা সিট সোজা করে বসে শক্ত করে বেল্ট এঁটে নিন, ধন্যবাদ।’’
জানালায় মুখ রাখলো শান্তনু। কড়া রোদ বাইরে। নিচে পটে আঁকা ছোট ছোট বাড়ি। গাছপালা। লেক। পানি। নৌকা। সারি সারি রাস্তা। ছুটে চলা গাড়ি। আবছা আলো। সন্ধ্যা খুব কাছাকাছি। দূরে অরল্যান্ডো শহরের সারি সারি বিজলী বাতি। প্রচ- একটা ঝাঁকুনি দিয়ে রানওয়ে স্পর্শ করলো বিমানটি। যেন স্বপ্নের দেশে পা ফেললো শান্তনু। এবার বাকি মিশনের পালা। সিকিওরিটি চেকআপ আর লাগেজ নিয়ে আরও ঘন্টাখানেক পর বাইরে বেরিয়ে এল তারা।
নাতিশীতোষ্ণ ফ্লোরিডার আকাশে তখন থালার মতো রুপালী চাঁদ। সারি সারি জ্বলছে মিটিমিটি তারাদের দল। এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে আকাশের দিকে আনমনে তাকিয়ে কি যেন ভাবলো শান্তনু। তারপর জামান স্যারের তাড়া খেয়ে আগেই ঠিক করে রাখা মিনিবাসে লাগেজ ওঠালো। গন্তব্য ডিজনি রিসোর্ট। রাতটা কাটবে ওখানেই। ট্যুরের পরিকল্পনা অনুযায়ী হোটেলে লাগেজ রেখে ফ্রেশ হয়ে আধাঘন্টার মধ্যেই বেরিয়ে পড়বে তারা। গন্তব্য ডিজনি ডাউন টাউন। বিশ্বের হাজারো পর্যটক ও তাদের শিশুরা সেখানে ভিড় জমায় প্রতিরাতে। তারপর হোটেলে ফিরে ডিনার। রাত ১১টায় ঘুম। পরদিন সকাল ৭টায় ডিজনি ওয়াল্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা।
সব পরিকল্পনা ঢাকা থেকেই সেরে এসেছেন শফিক ও জামান স্যার। কাল সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ডিজনির এনিমেল কিংডম ও ম্যাজিক কিংডম ভ্রমন। সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার ডিজনিতেই। ম্যাজিক কিংডমে নান্দনিক আতশবাজি দেখে রাত সাড়ে ১০টায় হোটেলে ফিরে ডিনার ও ঘুম। পরদিন সকালে ভ্রমন তালিকায় সি ওয়ার্ল্ড। সেখানে ডলফিন, তিমি, সিল শো দেখা। ভয়ংকর সব রাইডে ওঠা। আ-ার ওয়াটার ওয়াল্ড এবং থ্রি ও ফোর ডি মুভি দেখা। তবে আজ থেকেই ঘুম নেই শান্তনুর। কিভাবে ঘুমাতে হয় যেন ভুলে গেছে।
স্যারদের অনুরোধ করে শান্তনু, মইনাক ও রাশেদ এক রুম নিয়েছে। মিশনের খুব কাছাকাছি তারা। তাই পরিকল্পনাগুলো  ঝালিয়ে নিতে হবে শেষ মুহুর্তে। সারা রাত নির্ঘুম কাটালো। পরদিন ডিজনি ওয়াল্ডের ভ্রমন আকর্ষনীয় লাগলেও মন পড়ে থাকলো শত কিলোমিটার দূরের টিটাসভিল শহরে। যে মিশন নিয়ে হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে শান্তনু ও তার দুই ঘনিষ্ট বন্ধু। যে মিশনের নাম নাসা বিডি-০০৩।

Saturday, May 11, 2019

ধারাবাহিক কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসি- স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান

স্কুল ট্রিপে নাসা অভিযান , কিশোর সায়েন্স ফ্যান্টাসিটি ২০১৫ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ধারাবাহিকভাবে আমার ব্যক্তিগত ব্লগে আগ্রহী পাঠকদের জন্য প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

আজ এর প্রথম পর্ব।

 

(এক)
বিকাল সাড়ে ৩টা। মেঘের কুণ্ডলি থেকে ধীরে ধীরে নিচে নামছে সুপরিসর বিমান বোয়িং-৭৭৭-৩০০ ইআর। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিলাসবহুল বিমানটির সাড়ে ৪শ যাত্রীর মধ্যে বেশিরভাগ এখনো ঘুমে।
ককপিট থেকে ভেসে এল পাইলট এর ঘোষণা।
‘‘ ভদ্র মহিলা ও মহোদয়গণ, আর অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা অবতরণ করতে যাচ্ছি। সম্ভবত আমরা আগামী ১৫ মিনিটের মধ্যে স্পর্শ করবো জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টারমার্ক। অনুগ্রহ করে আপনারা আপনাদের সিট বেল্ট শক্ত করে বেঁধে নিন।’’
তখনো তন্দ্রাচ্ছন্ন শান্তনু। একজন কেবিন ক্রু এসে আলতো করে কাঁধ ঝাকাতেই ঘুম ভাঙলো। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়ানোর পর টানা ১৪ ঘন্টার ভ্রমনে ম্যাজম্যাজে ভাব ধরেছে শরীরে। চোখ কচলে জানালার নামানো শাটার তুলে তাকাতেই একঝাঁক আলোর ঝাপটা লাগলো মুখে। নিউইয়র্কে এখন গরমকাল। ঝকমকে রোদ। পেঁজা তুলোর মতো ছড়ানো ছিটানো মেঘ। ধীরে ধীরে নানান কসরত করে ডানা ছোট করে নিচে নামছে বোয়িং ৭৭৭-৩০০ বিমানটি। নিচে ছোট ছোট বাড়ি ঘর। সাপের মতো এঁকেবেঁকে যাওয়া কিছু সড়ক। দ্রুতগামী গাড়ি। উড়োজাহাজ যতো নিচে নামলো চিকচিক করে উঠলো আটলান্টিকের শান্ত নীল জল। ছোট ছোট ফিশিং বোট। চোখে পড়লো দু’একটা বিশাল আকারের বাণিজ্যিক জাহাজও। মিনিট দশেকের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে রানওয়েতে নেমে পড়লো উড়োজাহাজটি।
উড়োজাহাজ এর জানালার পাশে বসা শান্তনু। তার পাশের দুই সিটে রাশেদ ও মইনাক। ল্যা-িং এর সময় তিন বন্ধু শক্ত করে ধরে থাকলো অপরজনের হাত। বুকের মধ্যে কেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে। ভালোলাগায় ভরে গেছে মন। জানালা দিয়ে চোখে পড়ে দুরের টার্মিনাল ভবন। ঝাঁকে ঝাঁকে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে বিভিন্ন দেশের পতাকাবাহী উড়োজাহাজ। বিমানবন্দর কর্মীদের ব্যস্ত ছুটোছুটি। কয়েকজন সতর্ক নিরাপত্তা রক্ষীর শকুন চোখ দৃষ্টি এড়ায়না শান্তনুর। সুপরিসর বিমানটি থেমে যেতেই হৈ চৈ এ মেতে উঠলো মাঝের অংশের ৫২ জন কিশোর-কিশোরী। শান্তনু তার অন্যতম। যেন অনেক দিনের বোনা স্বপ্নের ফসল আজ প্রবল ¯্রােতে ঘরে ঢুকছে।
শান্তনু ও লেভেলে পড়ে। ধানমন্ডির হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। তাদের দলে ৫২ জন ছেলেমেয়ে। শফিক আর জামান স্যার তাদের গাইড। মোট অভিযাত্রী ৫৪ জন। স্টাডি ট্যুরে আমেরিকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখবে তারা। ২০ দিনের সফর। অবশ্য অন্য কোন স্থান তেমন টানেনি শান্তনুকে। তার স্বপ্ন নাসার স্পেস সেন্টার। যে স্বপ্নের জাল বুনে আসছে বিগত কয়েক বছর ধরেই। কী এক মোহনীয় বিকেল। স্বপ্নগুলো যেন সেজেগুজে সারিবদ্ধভাবে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।  এখন তাদের এক এক করে ছুঁয়ে দেখবে শান্তনু।
উড়োজাহাজ থেকে নেমে ইমিগ্রেশন, নিরাপত্তা তল্লাশি ও লাগেজ পেতে আরও ঘন্টাখানেক লেগে গেল। বিকাল সাড়ে ৪টায় সারিবদ্ধভাবে তারা বেরিয়ে এল জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে। তখন পড়ন্ত বিকেল। তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। একঝাঁক শীতল হাওয়া এসে ছুঁয়ে গেল ক্ষুদে অভিযাত্রী দলটিকে। 
এয়ারপোর্টের বাইরে এসে ট্রলি ঠেলে মূল সড়কের পাশে এসে দাঁড়ালো দলটি। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষাভাষী হাজারো মানুষের ভিড়। স্বজনদের ব্যস্ততা। আবেগঘন আলিঙ্গনে প্রিয়জনকে বরণ চলছে এদিক সেদিক। হলুদ ট্যাক্সি ক্যাবের সারি। নিউইয়র্ক পুলিশ- এনওয়াইপিডি সদস্যদের সজাগ দৃষ্টি। ছুটে চলছে সারি সারি গাড়ি। এ যেন এক স্বপ্নের শহর। ঝকমকে পরিচ্ছন্ন, ছবির মতো চারপাশ।
আগেই বুকিং দেয়া ছিল ট্যুরিষ্ট বাস। যে মিনিবাসটিতে করে শিক্ষার্থীরা যাবে জ্যামাইকার হিলসাইডে। সেখানে একরাত থেকে পরদিন দুপুর আবার অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজে রওনা দেবে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরল্যা-োতে। অবশ্য শান্তনু বাসে যাবেনা বলে আগেই অনুমতি নিয়ে রেখেছিল স্যারদের কাছে। নিউইয়র্ক থাকেন শান্তনুর বড় খালা। বড় খালা নিজেই গাড়ি চালিয়ে এসেছেন। সঙ্গে দুই ছেলে মেয়ে।
শান্তনুকে দেখে প্রথমে চিনতে পারেনি বড় খালা। হাতে কাগজে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বড় খালা দেশে আসেননি দশ বছর। স্কাইপ কলে ছবি দেখেছেন। এরপরও ৫২ জন একই বয়সী ছেলে-মেয়ের ভিড়ে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেছেন। শান্তনুই ছুটে গিয়ে খালাকে জড়িয়ে ধরেছে। শান্তনুকে কাছে পেয়ে হুহু করে কেঁদে বুক ভাসালেন শর্মি খালা। শান্তনু বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকলো। গত বছর এই সময়ে ক্যান্সারে ভুগে মারা যান শান্তনুর মা। শর্মি খালা যেতে চেয়েছিলেন। তবে দুই ছেলে মেয়ের পরীক্ষা আর এটা সেটা ঝামেলায় শেষতক যাওয়া হয়নি। এতোদিন পর তাই শান্তনুকে কাছে পেয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। এলোমেলো চুমু খাচ্ছিলেন। মাথায় গালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে রাশেদ, শান্তনু আর মইনাকের লাগেজ গাড়ির বনেটে তুলে ফেলেছে খালাতো ভাই শাওন। বন্ধু মইনাক এবং রাশেদও  যাচ্ছে শান্তনুর সঙ্গে।
জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পেছনে ফেলে শাঁ শাঁ করে ছুটে চলেছে গাড়ি। দুধারে ছবির মতো সাজানো বাড়িঘর। বড় খালা পেছনের সিটে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছেন শান্তনুকে। শান্তনু অবাক চেয়ে দেখছে গাড়ির জানালায় ঝুলে থাকা নিউ ইয়র্ক। সারি সারি গাড়ি। সাপের মতো প্যাচানো উড়াল সড়ক। কার্ডবোর্ড এ ছবির মতো আঁকা বাড়িঘর। দুপাশে রঙিন গাছ। খালা বললেন, এখন ফল সিজন। শীতের আগে গাছের সব পাতা লাল বা খয়েরি হয়ে ঝুলে থাকবে। তারপর শীত আসলে সব পাতা ঝরে ন্যাড়া মাথায় বরফ মাখবে গাছগুলো। পাশ দিয়ে শাঁই শাঁই করে ছুটে চলেছে বিশাল বিশাল কার্গো ভ্যান। পুলিশের একটি গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে সাঁই করে ছুটে গেল পাশ দিয়ে। শব্দ শুনে নড়ে চড়ে বসলো ড্রাইভিং সিটে বসা শাওন। সামনের আসনে বসা ছোট বোন সোহানীর সিট বেল্ট ঠিকঠাক আছে কি না তা পরখ করে নিল একপলকে।
বিকাল সাড়ে ৫টা। শান্তনুর বড় খালাদের বাড়ি নিউইয়র্কের কুইন্স ভিলেজ। অভিযাত্রী দলের বাকিরা থাকবে জ্যামাইকার হিল সাইডে। হিল সাইড থেকে কুইন্স ভিলেজ আধা ঘন্টার ড্রাইভ। হিল সাইড পেরিয়ে শান্ত নিরিবিলি আবাসিক এলাকা কুইন্স ভিলেজে ছবির মতো সাজানো একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে এসে থামলো বড় খালার লেটেষ্ট মডেলের হোন্ডা সিভিক গাড়ি। বাড়ির সামনে মাচানে লাউগাছ। কটা টমেটো। দুটো বেগুন। কয়েকটা আকাশী মরিচ গাছে ঝাঁকড়া মরিচ লাল হয়ে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। দরজা খুললেন বড় খালু। কিছুক্ষণ আগে তিনি ফিরেছেন বাইরে থেকে। সালাম করলো শান্তনুরা। বুকে জড়িয়ে নিলেন খালু। আজ যেন কতোদিন পর কুইন্স ভিলেজের এই বাড়িটায় উৎসবের রঙ লেগেছে। ফ্রেশ হয়ে বিশ্রামের সুযোগ দিলেন না খালু। সময় কম। সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। উদ্দেশ্যবিহীন গন্তব্য । স্থান নিউইয়র্ক শহরের ডাউন টাউন ম্যানহাটান।  বিশ্বের তাবৎ উুঁচু ভবন। বড় বড় কর্পোরেট হাউস। আকাশচুম্বী দামের ব্রা-ের দোকান। হার্ডসন নদীর দু ধারে যেন স্বপ্নপুরী। অবাক দৃষ্টিতে জানালায় তাকিয়ে আছে শান্তনু, রাশেদ ও মইনাক। আলো ঝলমলে এই রাতের নিউইয়র্ক যেন স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর। ম্যানহাটানের অলি গলি ঘুরে গাড়ি এসে থামলো টাইমস স্কোয়ারে। নিয়ন সাইন আর ডিজিটাল ডিসপ্লের যেন অন্যরকম স্বপ্নপূরী। হাজারো উল্লসিত মানুষ। কতো ধর্ম কতো বর্ণ। সব মিলে মিশে একাকার। হিড়িক পড়েছে দাঁড়িয়ে, বসে , দল বেঁধে ছবি তোলার। উচ্চ শব্দে ওয়েষ্টার্ণ মিউজিক এর আবহ চারপাশে। কোন এক স্বপ্নপূরীতে হারিয়ে যেতে লাগলো শান্তনু। মইনাক আর রাশেদও তলিয়ে যেতে থাকলো স্বপ্নের ভূবনে।
বেশ রাত করে বাড়ি ফিরলো তারা। বড় খালা গাল ফুলিয়ে বসে আছেন।
বড় খালা বললেন, ‘‘ ছেলেগুলো কতো লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে এলো। আর তুমি বসারই সুযোগ দিলা না। বিশ্রাম তো দূরের কথা। আহারে... মুখ শুকিয়ে গেছে বাচ্চাগুলার।’’
বড় খালু হাসলেন। রহস্যের হাসি।
‘‘ কতো না ক্ষিধা পেয়েছে বাবা শান্তনুর। উফ শাওনের বাবা তোমাকে নিয়ে আর পারিনা। গেলেই যদি কেন আগে ফিরলানা। খাওয়ার সময় পেরিয়ে গেছে সেই কখন। এই তোমরা যাও। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে আসো। ’’
খালা ব্যস্ত হলেন টেবিল সাজাতে। বড় খালু মুখ টিপে হাসলেন। চোখাচোখি হতে শাওনও হেসে ফেললো। ম্যানহাটানের রাস্তায় বাঙালি কারিগরের হাতে আফগান খাবার ‘জাইরো’ খেয়েছে সবাই পেট পুরে। খালা শুনলে রাগ করবেন। তাই সবার মুখ বন্ধ।
টেবিলে খাবার সাজালেন শর্মি খালা। ধেঁাঁয়া ওঠা সাদা ভাত, ছোট মাছের চচ্চরি, বেগুন ভাজা, চ্যাপা শুটকির ভর্তা, সর্ষে ইলিশ আর ঝাল চিকেন কারি। ভরা পেট। তবুও এমন খাবারের লোভ সামলাতে পারলোনা কেউই। খাওয়া শেষে ঘুমের পালা। বড় খালা সারা রাত ঘুমাননি। শান্তনুকে শুইয়ে দিয়ে পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন। শান্তনু তলিয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে। হাত ধরে বসে রইলেন শর্মি খালা। ফজরের নামাজ পড়ে আবার কোমর বেঁধে নেমে গেলেন রান্নায়। সকাল ১১ টায় শান্তনুদের লাগার্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়ে আবারো কেঁদে বুক ভাসালেন শর্মি খালা। দুই শিক্ষককে অনুরোধ করলেন ফেরার পথে শান্তনুদের অন্তত আরেকবার বাসায় আনার সুযোগ দেয়ার।

Thursday, May 9, 2019

অন্ধকারে সপ্তর্ষিমণ্ডলের দিকে তাকিয়েছো কখনো?
কখনো রাত্রির ঝিরিঝিরি শান্ত বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে দেখেছো ভরা পূর্ণিমার চাঁদ?
কখনো দেখেছো মেঘেদের গলাগলি,
কখনো ছু্ঁয়েছো বারান্দার কার্নিশ বেয়ে নেমে আসা অঝোর বৃষ্টির জল?
কখনো দেখেছো কংক্রিট নগরের বুকে সদ্যজাত ঘাসফুল!
কখনো দোল খেয়ে আছড়ে পড়া কাশফুলের শুভ্রতা মেখেছো বুকে?
কখনো দেখেছো গোলাপ আঁকড়ে থাকা কুয়াশার স্বচ্ছ স্ফটিক!
কখনো দেখেছো একাকী মানুষের সারিবদ্ধ দীর্ঘ মিছিল
দীর্ঘশ্বাসে বাস্পীভূত কার্বনে বিষাক্ত নগর,
গহীন গ্রামের সন্ধেবাতি, উঠোনজোড়া জানালার উলম্ব শিক
অথবা ভাঙা বাঁশের চাঁটাই বেড়া, ছেড়া আঁচলে টানানো শীতযুদ্ধ
সলজ্জ মায়াবতী কিশোরীর হাসি, বধূর নোলক কিংবা শহুরে স্কুল বালিকার যৌথ বেনীর উদ্দাম নৃত্য
জোড়া জোড়া চোখ, চোখ জোড়া স্বপ্নের পিরামিড
চোখ খোলো, দেখো- মায়া, মায়া মায়াময় জীবনের অনন্তগ্রাম
সুর তোলো, জেগে ওঠো প্রেম
শানিত তরবারি নয়, নয় দীর্ঘশ্বাস, বাঁচো
প্রেমময় পৃথিবীটা দেখে নাও একবার
খুলে দাও বন্ধ কবাট, জানালায় উড়ে যাক স্বপ্নেরা ঝাঁকে ঝাঁকে
ভেঙে দাও মনের কপট সিন্দুক, খুলে দাও বন্ধ দুয়ার।
১০/০৫/১৭

Saturday, May 4, 2019

Warning!! deceivers all arround you

My mother is a simple and good soul women. She is also a victim of the bKash fraud system. This evening is very bad. For mom. Many times I talked her please did not give any response when someone called the bKash office.

The deceivers also change the latest techniques. Today's incident is completely different.

In the afternoon, my cousin send
six thousand taka to the account of my mothers mobile bank from bkas agent 0183-0728462. he located in from Konabari of Gazipur district.  But he did not confirm my mom over the phone immediately. 

Within a short time after sending the money, the bKash agent gave my mother's number and the amount of money  to the deceased group. One of the deceivers called a phone call from 0188-7188024 and said that the number of money went missing in digit number, send the money back.

Mother will say very well and I will send back after the confirmation.

Within a short time, the fraudsters have phoned and said he already complained to the bKash office and  your account has blocked them so that they can not pick up the money.

That's enough to scare mother. Soon after 01864459573, another deceiver by calling a bKash head office officer. He says that you have to give some information to open your account. My mother just kept talking about keeping everything right. The result - 6 thousand taka disappeared, and also lost her pin number. The fraudsters did not just take money, pin number changed.

Although the amount of money is not very much, the event does not stop there. Every day thousands of people are being cheated by their hands in some way. Earlier, they
introduced head office officer  the whole thing but now they are trying to make the whole thing believable.

It is a matter of common law and order enforcement agency in the digital Bangladesh to get these scribbles. Maybe they take occasional occasion. But if you make a mistake, you will not be able to catch two people. The whole network will be broken.

The bKash agent is also directly involved in this incident.

I'm giving publicly these three numbers. There is no hope of returning my mothers Tk 6,000. But this is the least hope that friends of law enforcers will bring the whole fraud system under the rule of these three numbers. So that the innocent, ordinary people do not have to pay the hard earned money in this way.

Three phone numbers of fraudsters, of course, whose information can be obtained from the registration-

0183-0728462

0188-7188024

01864459573

বিকাশ প্রতারণার নতুন কৌশল


আমার মা খুবই সাদাসিধে একজন মানুষ। বিকাশ প্রতারক চক্রের শিকার হলেন তিনিও। সন্ধ্যা থেকে মনটা খুব খারাপ। মায়ের জন্য। অনেকবার সাবধান করেছিলাম বিকাশ অফিস নামে কেউ ফোন দিলে সাড়া না দিতে।
প্রতারকরাও নিত্যনতুন কৌশল পাল্টায়। আজকের ঘটনাটা একেবারেই অন্যরকম।
বিকেলবেলা গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে 0183-0728462 এই এজেন্ট নাম্বার থেকে আমার এক খালাতো ভাই একজনের চিকিৎসা বাবদ মা’র একাউন্টে ৬ হাজার টাকা পাঠায়। কিন্তু সে মা’কে তৎক্ষণাৎ ফোন দিয়ে কনফার্ম করেনি।
টাকা পাঠিয়ে সে স্থান ত্যাগ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকাশ এজেন্ট মা’র নাম্বার আর পাঠানো টাকার অঙ্ক প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেয়। প্রতারকদের একজন 0188-7188024 নাম্বার থেকে ফোন করে কান্নাকাটি করে বলে- ডিজিট ভুল করে আপনার নাম্বারে টাকা চলে গেছে, টাকাটা ফেরত পাঠান।
মা’ খুব সাধারণভাবেই বলে ঠিক আছে কনফার্ম করে ফেরত পাঠাবো।
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ওই প্রতারক ফোন করে বলে বিকাশ অফিসে কমপ্লেইন করা হয়েছে, আপনার একাউন্ট ওরা ব্লক করে দিয়েছে যাতে টাকাটা তুলতে না পারেন।
মা’র ঘাবড়ানোর জন্য এটা খুব যথেষ্ঠ। ঠিক এর পরপরই 01864459573 নাম্বার থেকে বিকাশ হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে আরেক প্রতারক। সে বলে আপনার একাউন্ট খুলে দিতে কিছু তথ্য লাগবে। আমার সাদাসিধে মা একাউন্ট ঠিক রাখতে কথামতো সব করেও ফেলেন। পরিণাম- ৬ হাজার টাকা উধাও, সঙ্গে নিজের পিন নাম্বারও খোয়ানো। প্রতারকরা শুধু টাকা নেয়নি, পিন নাম্বারও বদলে দিয়েছে।
টাকার অঙ্কটা খুব বেশি না হলেও ঘটনা কিন্তু থেমে নেই। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এদের হাতে কোন না কোন ভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। আগে সরাসরি হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও এখন পুরো একটি ঘটনা সাজিয়ে তারপর পুরো বিষয়টাকে বিশ্বাসযোগ্য করার অপচেষ্টা করছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশে এসব প্রতারকচক্র ধরা আইনশৃংখলা বাহিনীর মামুলি ব্যাপার। হয়তো তারা ধরেনও মাঝে মধ্যে। কিন্তু নির্মুল করতে গেলে এক’দুজনকে ধরে হবেনা। ভেঙে দিতে হবে পুরো নেটওয়ার্ক।
বিকাশ এজেন্টও এই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
তিনটি নাম্বারই দিয়ে দিলাম। আমার মায়ের ৬ হাজার টাকা ফেরত পাবার আশা নেই। কিন্তু এটুকু আশা অন্তত করাই যায় যে, আইনশৃংখলা বাহিনীর বন্ধুরা এই তিনটি নাম্বারের সূত্র ধরে পুরো প্রতারক চক্রটাকেই আইনের আওতায় আনবে। যাতে করে নিরীহ, সাধারণ মানুষকে এভাবে কষ্টার্জিত অর্থ না খোয়াতে হয়।
প্রতারকদের তিনটি ফোন নাম্বার, নিশ্চই যার রেজিষ্টেশন থেকে তথ্য নেয়া সম্ভব-
0183-0728462
0188-7188024
01864459573


Thursday, May 2, 2019

মানুষের কাছ থেকে রঙ বদলাতে শিখেছিল গিরগিটি
এখন ওরা লোকালয় থেকে বহু দূরে;
মানুষ রঙ বদলায় নিয়ত, খোলস বদলানো চকমকে নতুন সরীসৃপ
নিজেকে টেনে হেঁচড়ে সমাজের কর্দমাক্ত বুকে নিয়ে বলে-
দেখো-চিনতে পারো? আমিও তোমাদের মত বদলেছি রঙ
আমিও গিরগিটি, বুকে ভর দিয়ে চলা ভুজঙ্গম সরীসৃপ।
২৭/০৩/১৯

Wednesday, May 1, 2019

নেপালের প্রত্যন্ত একটি পাহাড়ী গ্রামে গিয়েছিলাম সম্ভবত ২০১১ সালে। দুর্গম এলাকা বলে ওখানে পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা ছিল না। স্থানীয়রা বৃষ্টির পানি ধরে রেখে কিভাবে তা কাজে লাগায়- মূলত সে বিষয়গুলো দেখতেই এশিয়ার জনা বিশেক সাংবাদিককে নিয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংস্থা থার্ডপোল ও ইন্টারনিউজ।
খুব অবাক হয়েছিলাম ওই প্রত্যন্ত এলাকার মেয়েটি কত সংগ্রাম করে দৃঢ় মনোবল নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ করে নিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে গিয়েছি শুনে তার আতিথেয়তা ছিল মনে রাখার মতো।
কিছু চেনা মুখ, চেনা চেনা সুখ
কাটাকুটি, খুনসুটি, ফালি ফালি অভিমানে
ভাল আছি খুব; ভাল থাকা হয়ে যায়।
ডানা মেলা রোদ মেখে, চেনা গলি শহরের
খোলা দুল, এলো চুল, চোরা কান্নার ঢেউ মেখে
সেই ভাল বেঁচে থাকা-
জীবনের বাঁকে বাঁকে,কত পথ চেনা হয়
কত পথ বাকি থাকে, ঘোর লাগা সন্ধ্যায়,
জোছনা হারিয়ে পথে, ভুলভাল সোডিয়ামে
উদ্ভট রঙ মেখে, আসল-নকল চেনা বড় দায়।
তবুও চলছে সব, মিছে মিছে কলরব
স্বার্থের বিকিকিনি, মেকি ভালোবাসা মোহ
দুপুরের শুনশানে, একা একা আনমনে
বেখেয়ালে হারাও কোথায়! কেন হয় রক্তক্ষরণ!
চোখ বুঁজে দেখে নাও, কি দারুণ উচাটন-
সব থেকেও কিছু নেই, জীবন- হায় জীবন।।
২৪/০৩/১৯
দ্যাখো, নিজেকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছো
কী অবলীলায়-
সবাই নিজেকে বয়ে নিয়ে যায়
ক্লান্তির পথে অতল ঘুম।
৩০/০৪/১৮
Back To The Childhood

একদঙ্গল ধবল শাদা মেঘ ছুটে গেল চাঁদের আলো গায়ে মেখে
যেন বর্ষার নতুন জলে হুটোপুটি খায় কতিপয় দুরন্ত কিশোর
আমিও মেঘের ডানায় ভেসে যেতে চেয়েছিলাম,
খড়ের গাদায়, গোরুর পালে, শিস দিয়ে যাওয়া দোয়েলের কাজল চোখে
ফিঙের দুরন্ত ডানায়, মেঠো পথ, হুহু বাতাসের হুল্রোড়ে দুলে ওঠা সজীব কেয়া পাতায়
মেঘরা ঠিক উড়তে জানে, মনও
তবুও ওড়া হয়নি, হয়না কখনো
ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকতে থাকতে দু’পায়ে শেকড়
ওড়া হয়না, ডানার পালক ঝরে যায় নিয়ত।
২২/০৩/১৯

দিনাজপুরে লোহার খনি পেলেন বিশেষজ্ঞরা: মান অন্য যে কোন দেশের চেয়ে ভাল

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপর গ্রামে উন্নত মানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনির সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ...