Tuesday, June 18, 2019

দিনাজপুরে লোহার খনি পেলেন বিশেষজ্ঞরা: মান অন্য যে কোন দেশের চেয়ে ভাল

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপর গ্রামে উন্নত মানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনির সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। সেখানে ভূগর্ভের ১ হাজার ৭৫০ ফুট নিচে ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার একটি স্তর পাওয়া গেছে, যা দেশের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার বিষয়।
বাংলাদেশে প্রথম এই লোহার খনির সন্ধান পাওয়া গেল। খনি পেয়ে উত্তরের হাজারও মানুষ নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন । নতুন করে কর্মসংস্থন সৃষ্টি হবে। মঙ্গলবার জিএসবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ২ মাস ধরে কূপ খনন করে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। খননকাজে নিয়োজিত জিএসবির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম জানান, বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেসব খনির লোহার মান ৫০ শতাংশের নিচে। আর বাংলাদেশের লোহার ৬৫ শতাংশের উপরে। জয়পুরহাট বিসিএসআইআর পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। ইসবপুরে লোহার খনির সন্ধান বাংলাদেশে এটিই প্রথম, যার ব্যাপ্তী রয়েছে ৬-১০ স্কয়ার কিলোমিটার পর্যন্ত। এখানে কপার, নিকেল ও ক্রুমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে। ১,১৫০ ফুট গভীরতায় চুনাপাথরের সন্ধানও মিলেছে।
তিনি আরও জানান, এর আগে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ২০১৩ সালে এই গ্রামের ৩ কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্র ধরেই দীর্ঘ ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। এরপর ১,৩৮০-১,৫০০ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খননকালে সেখানে আশার আলো দেখতে পাওয়া যায়। এই খবর পেয়ে ২৬ মে জিএসবির মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানে পরিদর্শনে আসেন।
তখন সাংবাদিকদের সু-খবর না দিলেও লোহার খনির সন্ধান পাওয়া যেতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মহাপরিচালক। অবশেষে দীর্ঘ চেষ্টার ফলে ১,৭৫০ ফুট গভীরে খনন করে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের এই স্তরটি পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। সে কারণে এখানে জমাট বাঁধা আদী শীলার ভেতরে লোহার আকরিকের এ সন্ধান পাওয়া যায়।
উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রাম। এ গ্রামের কৃষক ইছাহাক আলীর কাছ থেকে ৫০ শতক জমি ৪ মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে খনিজ পদার্থের অনুসন্ধানে কূপ খনন শুরু করে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর।
জিএসবির উপ-পরিচালক, (ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ার) মো. মাসুদ রানা জানান, গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ একটি দল ৩ শিফটে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
ইসবপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, আমরা জানতে পারলাম, এখানে লোহার খনি পাওয়া গেছে। এখান থেকে লোহা উত্তোলন করা হলে, এখানকার মানুষদের জীবনমান পাল্টে যাবে। কর্মসংস্থান হবে এখানকার মানুষদের। দেশের জন্যও লাভজনক হবে। এমনই আশায় বুক বাঁধছেন এখানকার সর্বস্তরের মানুষ।

Monday, June 17, 2019

ইন্টারনেট দুনিয়ার লাখো মানুষকে কাঁদায় যে ছবি

মোটরসাইকেল গ্লাভসে মাথা রাখা সদ্যজাত একটি শিশুর ছবি সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে কাঁদিয়ে যাচ্ছে সেই ২০১৬ সাল থেকে।  শিশুটির হাসিমুখ বুঝিয়ে দিচ্ছে- মৃত বাবার স্পর্শে তার কচি হৃদয় যেন জেগে উঠেছে। হতভাগ্য শিশুটির নাম আউবেরি। ওর জন্মের মাত্র একমাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান পিতা হেক্টর ড্যানিয়েল ফেরের আলভারেজ। 
আমেরিকার ফ্লোরিডার পঁচিশ বছর বয়সী হেক্টর একসঙ্গে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরতে চেয়েছিলেন। সে জন্য স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর তার বহু শখের মোটরসাইকেল রাইডিং প্রায় বন্ধও করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য টেনে নিয়ে যায় আউবেরির জন্মের মাত্র একমাস আগে। ২০১৬ সালের এপ্রিলে বেদনাবিধুর স্মৃতি রেখে চলে যান হেক্টর।  
ওর ‍মৃত্যুর কিছুদিন পর বিখ্যাত ফটোগ্রাফার বন্ধু কিম স্টোন আউবেরির কিছু ছবি তোলেন। এসময় একটি ছবি তুলতে মৃত পিতার মোটরসাইকেলের হেলমেট পাশে রেখে তুলতুলে গ্লাভস মাথার নিচে রেখে দেন কিম স্টোন। মাত্র জন্ম নেয়া আউবেরি যেন ওই গ্লাভসে বাবার গন্ধ পায়। যেন সদ্যজাত শিশুকে ছুঁয়ে দেয় হেক্টর। স্বর্গীয় হাসিতে মেতে ওঠে আউবেরি। কিম স্টোনের সেই ছবি তার পর থেকেই সারা বিশ্বে ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়াতে থাকে। ছবিটি একপলক দেখে নিভৃতে দীর্ঘশ্বাস আর চোখের জল ফেলেন লাখ লাখ মানুষ। বিশেষ করে বাবা দিবস এলে এই ছবিটিই যেন থিম ছবি হয়ে দাঁড়ায়। 
কিম স্টোন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম যেমন ডেইলি মেইল ইউকে ও এবিসি নিউজকে বলেন 'তার বাবা  মোটর সাইকেল প্রেমী ছিলেন। তবে তিনি সবসময় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েই চালাতেন। তিনি নিশ্চিত যে তিনি নিরাপদ। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাকে ছাড়েনি। 
'তিনি তার বাগদত্তার সাথে বাইকের প্রতি তার প্রেম ভাগ করে নিয়েছিলেন এবং তাদের সম্পর্ক ছিল প্রেমান্ধ। তারা জীবনের সব পরিকল্পনা গুছিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই হলো না। 'এখন আউবেরি ও তার মা ক্যাথরিন হেক্টরের স্মৃতি বুকে বয়ে বেড়াবেন। হেক্টরের গ্লাভস আর হেলমেট ছুঁয়ে তার উপস্থিতি অনুভব করবেন। 
ছোটবেলা থেকেই মোটর সাইকেলে চড়ার শখ হেক্টরের। মোটর সাইকেলে ‍ঘুরতে গিয়েই খুঁজে পেয়েছেন জীবনসঙ্গীনী ক্যাথরিন উইলিয়ামসকে। বিয়ের পর মোটর সাইকেলে চড়েই ঘুরে বেড়িয়েছেন দুজনে। এর মাঝে সন্তান সম্ভবা হলেন ক্যাথরিন। স্ত্রী- সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে একা একাই মোটরবাইক চড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন হেক্টর। যতদিন তাঁর সন্তান বড় হবে না ততদিন মা–সন্তানকে নিয়ে মোটরবাইক চালাবেন না তিনি।
পরিবারকে দূঘর্টনার ঝুঁকিতে ফেলতে না চাওয়াতেই তার এই সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত, মেয়েকে নিয়ে আর মোটর সাইকেলে চড়া হলো না হেক্টরের। মেয়ের জন্মের মাত্র কয়েক দিন আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো তাঁর।

হেক্টরের মৃত্যু সংবাদ পেলেন তাঁর বন্ধু কিম স্টোন, বাচ্চাদের ছবি তোলায় যার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। কিম পৌঁছে গেলেন হেক্টরের বাড়ি। ছবি তুললেন, ঘুমিয়ে থাকা ছোট্ট মেয়ের। ক্যথরিন তার স্বামী হেক্টরের স্মৃতি বিজড়িত দুটো গ্লাভসের একটি রেখে দিলেন ঘুমন্ত শিশুর মাথার নিচে, আর একটি ছোট্টো শরীরের উপর। না দেখা বাবার স্মৃতি জড়িয়ে ঘুমের মাঝেই মুচকি হেসে উঠলো অবুঝ শিশুটি।
ক্যামেরার সাটার টিপে ধরলেন কিম স্টোন। ছবি তুলে এসে বললেন, লোকের মুখে শুনেছি ঈশ্বরের দূতের সঙ্গে দেখা হলে বাচ্চারা ঘুমের মধ্যে হাসে। এতদিন বিশ্বাস করিনি, এবার মনে হচ্ছে, কথাটা সত্যি।
হেক্টরের এই মর্মান্তিক ঘটনা বাইক চালকদের জন্য শিক্ষনীয়। প্লিজ আপনারাও নিরাপত্তা ও পরিবারের কথা ভেবে বাইক চালাবেন।
ছবি- কিম স্টোন
তথ্য- ডেইলি মেইল ও এবিসি নিউজ। 

অভিনন্দন টিম টাইগার: একের পর এক রেকর্ড করেই যাচ্ছেন সাকিব

অভিনন্দন সাকিব আল হাসান। অভিনন্দন টিম বাংলাদেশ। আজকের খেলা দেখার পর মনে হয়েছে বিশ্বকাপ জিতে গেছি। শুভকামনা।
বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব আল হাসান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুটি সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব। এর আগে গত বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সোমবার ইংল্যান্ডের টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওশান থমাসকে বাউন্ডারি হাঁকানোর মধ্য দিয়ে ৮৩ বলে শতরানের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন সাকিব। এর আগে গত শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২০২তম ম্যাচে সাকিবের এটা নবম সেঞ্চুরি। তবে টেস্টের ৫৫ ম্যাচে দেশের হয়ে ৫টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকটে থিতু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক রেকর্ড গড়েই যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের ক্রিকেট ক্যারিয়ার অপূর্ণতা ছিল বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি।
গত শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শতরানের ম্যাজিক ফিগার গড়ার মধ্য দিয়ে সেই অপূর্ণতা ঘুচান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সেদিন ইংলিশদের বিপক্ষে ১১৯ বলে ১২টি চার ও এক ছক্কায় ১২১ রান করেন সাকিব। তার সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮৭ রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে শেষ পর্যন্ত ২৮০ রান করে বাংলাদেশ।
সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন সাকিব। উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। উদ্বোধনী জুটিতে ৮.২ ওভারে ৫২ রান করেন তারা। ২৩ বলে ২৯ রান করে ফেরেন সৌম্য।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবালের সঙ্গে গড়েন ৬৯ রানের জুটি। ৫৩ বলে ৪৮ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন তামিম। রানের খাতা খুলতে না খুলতেই আউট হন মুশফিকুর রহিম। ১৯ ওভারে ১৩৩ রানে সৌম্য, তামিম, মুশফিকের বিদায়ের পর লিটনকে নিয়ে
দলের হাল ধরেন সাকিব।
চতুর্থ উইকেটে তাদের অনবদ্য জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। আর এই জুটিতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।

Sunday, June 16, 2019

বেঁচে যাচ্ছে সেই বিদ্রোহী বালক: আন্তর্জাতিক চাপে পিছু হটলো সৌদি

সৌদি আরবের শিয়া অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলে সুন্নিপন্থি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ১০ বছর বয়সে বিক্ষোভের অভিযোগে ১৩ বছর বয়সে গ্রেফতার হওয়া কিশোর মুর্তাজা কুরেইরিসকে মৃত্যুদণ্ডিত করার চিন্তা থেকে পিছু হটলো দেশটির কর্তৃপক্ষ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার তোপে সৌদি ওই কিশোরকে ‘তার অপরাধের জন্য’ প্রাথমিকভাবে দেওয়া কারাভোগ শেষে ২০২২ সালেই মুক্তি দেওয়ার চিন্তা করছে।
শনিবার (১৫ জুন) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন সৌদির সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তাকে মৃত্যুদণ্ডিত করা হবে না।’ যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি সরকার এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে বিষয়টি বিচারাধীন বিধায় এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসার সম্ভাবনাই প্রবল বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১১ সালে ‘আরব বসন্ত’র উত্তাল সময়ে সৌদি রাজতন্ত্রের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র দাবিতে গণবিক্ষোভকালে কুরেইরিস মাত্র ১০ বছর বয়সে তার বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে সাইকেল রাইডে নেমেছিল। ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তিন বছর পর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মুর্তাজাকে ১৩ বছর বয়সে গ্রেফতার করে রাজতন্ত্রের বাহিনী। সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ‘রাজনৈতিক বন্দী’ হিসেবে মুর্তাজাকে নিক্ষেপ করা হয় কারাগারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি আরবে ‘অপরাধের দায়’ দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমার বিষয়টি অস্পষ্ট হলেও সেখানকার রাজতন্ত্র বলে আসছিল এ বয়সসীমা ১২ বছর মানা হয়। এমনকি ‘দায়’ দেওয়ার বয়সের আগে কেউ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে সাজা দেওয়া হয় না। অথচ মুর্তাজার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগপত্র অনুসারে ‘অপরাধ সংঘঠিত করার সময়’ তার বয়স ছিল ১০ বছর। এমনকি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় মুর্তাজার ১৮ বছর বয়সে পদার্পণের কয়েক মাস আগে।
এ নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়ে সৌদির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তোলে। অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায় মুর্তাজাকে। এমনকি রিয়াদ কর্তৃপক্ষ মুর্তাজার মৃত্যুদণ্ড বাতিল না করলে অস্ট্রিয়ায় সৌদি অর্থায়নে পরিচালিত একটি ধর্মীয় আলোচনা কেন্দ্রও বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় ভিয়েনা। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সৌদি সরকারের ওই কর্মকর্তা বিশেষ সাক্ষাৎকারে মুর্তাজার বিষয়ে সেখানকার সরকারের বর্তমান অবস্থানের কথা জানান।

হেল প্লানেট COROT-7B: যেখানে হয় কাঁচ পাথরের বৃষ্টি

ধরে নিন- আপনি যে পৃথিবীতে আছেন তার দিনের তাপমাত্রা ২৬০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যার ভূ-অভ্যন্তরের তাপমাত্রা মোটামুটি ৪৭০০ ডিগ্রী! সেখানেও মেঘ জমছে, বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের পৃথিবীতে মাঝে মধ্যে ব্যাঙ, মাছ বা এসিড বৃষ্টির কথা শোনা যায়। কিন্তু সেই গ্রহে পাথরের মেঘ জমছে, বৃষ্টি পড়ছে পাথরের এমনকি উচ্চ তাপমাত্রায় গলিত পাথরের সিলিকা থেকে কাঁচ তৈরি হয়ে ঝরছে অঝোরে। সেই বৃষ্টি গিয়ে জমছে গলিত লাভার হ্রদে।
এ তো গেল বৃষ্টি! বাতাস তো থাকবেই এর সঙ্গে। আমরা যেখানে আছি- অর্থাৎ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বেগে ঝড় বা টর্নেডোর রেকর্ড হয়ত আমরা অনেকেই জানি। না জানলেও সমস্যা নেই, আমেরিকার ওকলাহামায় ১৯৯৯ সালে পৃথিবীর সব থেকে বেশি বেগে টর্নেডো হয়েছিল। সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৩০০ মাইল। এবার ভাবুন আপনি যে পাথুরে দুনিয়ায় আছেন সেখানে সাধারণত বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৫৪০০ মাইল বা ৮৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দাঁড়ায়। যা শব্দের গতির থেকে সাতগুন বেশি। এ তো সাধারণ সময়ের বাতাস, ঝড়ের সময়? সর্বনাশ, ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। ঝড়ের সময় সেখানে বাতাসের বেগ দাঁড়ায় ঘন্টায় ২১৭৭৪ মাইল। আমাদের জানামতে মহাবিশ্বে এটাই সবচেয়ে বেশি বাতাসের গতিবেগ। যার গতিবেগ শব্দের গতির থেকে প্রায় ২৯ গুন বেশি। 

শুনতে অবাক লাগছে? অবিশ্বাসও হতে পারে অনেকের। এমন একটি গ্রহ ‘‘কোরট-৭বি’’ রয়েছে আমাদের গ্যালাক্সি বা সৌরজগতের একটু বাইরে। পৃথিবী থেকে সেখানে যদি আপনি যেতে চান, আলোর গতিতে গেলে সেখানে পৌঁছাতে লাগবে কমপক্ষে ৫৫০ থেকে ৬০০ বছর!! এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরে আবিস্কৃত প্রথম গ্রহ, যা দেখতে অনেকটা পৃথিবীর মতোই। ২০০৯ সালে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সিগুলো দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোরট স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে এটি আবিস্কার করা হয়। গ্রহটি আকারে পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুন হলেও ভর পৃথিবীর প্রায় পাঁচগুন বেশি। গ্রহটি তার সূর্যের খুব কাছাকাছি অবস্থিত, যার দূরত্ব আনুমানিক ১.৬ মিলিয়ন মাইল। সেই গ্যালাক্সির সূর্যের এত কাছাকাছি থাকার কারনেই গ্রহটি এ যাবৎকালে আবিস্কৃত গ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত ও আবহাওয়া খুবই অন্যরকম বলে মনে করা হয়।  তাই অনেক শীতল পৃথিবীর বিপরীতে, COROT-7b এর বায়ুমণ্ডলে পরিচিত গ্যাস (কার্বন ডাই অক্সাইড, জল বাষ্প, নাইট্রোজেন) নেই বললেই চলে। এর পরিবর্তে সেখানকার বায়ুমন্ডলে শিলায় পরিপূর্ণ।
সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ব্রুস ফিগলি জুনিয়র বলেন, "এই বস্তুটি কেবলমাত্র লাভা লেক বা লাভা সমুদ্রের গরম গলিত সিলিকেটগুলি থেকে উদ্ভূত তরঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়।"
COROT-7b এর বায়ুমণ্ডলটি কেমন হতে পারে তা খুঁজে বের করতে, তার সহকর্মীরা Fegleyand এটিকে মডেল করেছিলেন। তারা দেখেছে যে COROT-7b এর বায়ুমণ্ডলগুলি পাথরের উপাদানগুলির থেকে তৈরি এবং যখন সামনের দিকে অগ্রসর হয়, তখন বায়ু থেকে বৃষ্টি ঝরে নীচের গলিত লাভাগুলির হ্রদে পতিত হয়।
"সোডিয়াম, পটাসিয়াম, সিলিকন মনোক্সাইড এবং তারপরে অক্সিজেন হয় কিনা পরমাণু বা আণবিক অক্সিজেন?" কিন্তু ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং লোহা যেমন অলঙ্কৃত শিলা পাওয়া অন্যান্য উপাদান ছোট পরিমাণে আছে।
শিলা বৃষ্টি পৃথিবীর পানির আবহাওয়ার অনুরূপ গঠন করে: "যখন আপনি উচ্চতর যান তখন বায়ুমন্ডলে শীতল হয়ে যায় এবং আপনি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পানির সাথে স্বাদুপ্রবাহের মতো বিভিন্ন ধরণের 'শিলা' দিয়ে সম্পৃক্ত হন।" একটি জল মেঘ গঠন এবং তারপর বৃষ্টিপাত, একটি 'শিলা মেঘ' গঠন করে এবং এটি বিভিন্ন ধরনের শিলা ছোট কাঁটার বৃষ্টি শুরু। "
এক্সপ্ল্যানেট এ অ্যাসেনস্টাইট, কর্ডডাম, স্পিনেল এবং উইলস্টোনাইট খনিজ পাওয়া যেতে পারে। সেখানে মৌলিক সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম, যা পাথরের তুলনায় খুব হলেও মেঘে মিশে যায় এবং উচ্চ তাপমাত্রাযুক্ত উজ্জ্বল কমলা মেঘ তৈরি করে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভা অবজারভেটরির ড. ডিডিয়ার কোয়েলজ এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, এই আবিস্কারটি রোমাঞ্চকর এবং আশ্চর্যজনক। 
ইউরোপীয় দক্ষিণ ওষুধের লা সিলা ওয়েবসার্টারিতে উচ্চ নির্ভুলতা রেডিয়াল-ভেলোসিটি প্ল্যানেট সার্চার (HARPS) যন্ত্র দ্বারা সংগৃহীত নতুন ডেটা থেকে এই মানগুলি নির্ধারণ করা হয়েছে। 
COROT-7b তার তারকায় প্রতি ঘন্টায় ৭ লাখ ৫০ হাজার কিলোমিটার গতির সূর্যকে ঘিরে ঘুরতে থাকে। যার ঘূর্ণনগতি সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর গতির তুলনায় সাতগুণ বেশি। যা প্রতি ১৭ ঘন্টায় তার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।
বিজ্ঞানীরা এখনো গ্রহটিকে নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছেন। মানুষের পক্ষে কোন একদিন হয়তো এই মহাবিশ্ব ছাড়িয়ে অন্য সৌরজগতে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু এই মুহুর্তে ৫শ আলোকবর্ষ দূরের কোন গ্রহে যাওয়ার চিন্তাও করার কোন অবকাশ নেই, কারন এই মুহুর্তে পৃথিবী থেকে ওই গ্রহের কাছাকাছি পৌঁছাতে মানুষকে প্রায় অমর হতে হবে, যা কল্পনাতীত।  
সূত্র- ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, গুগল, ইউটিউব।

Saturday, June 15, 2019

আর নয় অপারেশন- এবার ড্রপেই সারবে ছানি

আমেরিকার গবেষকরা একটি নতুন ড্রপ তৈরি করেছেন যা মানুষের চোখে অন্ধত্বের প্রধান কারণ ছানিকে অপসারণ করে। এটি ড্রপারের মাধ্যমে সরাসরি প্রয়োগ করা যায়। এর ফলে অপারেশন ছাড়াই ছানি থেকে মুক্তি পাবেন পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষ।
নতুন এই ড্রপটি বিশ্বের কোন কোন দেশে সীমিত আকারে প্রয়োগ করে ফল পাওয়া গেছে। তুরস্কের আঙ্কারার বিখ্যাত চক্ষু হাসপাতাল ড. খলিল আই ক্লিনিক তাদের ওয়েবসাইটে এই ড্রপের মাধ্যমে চিকিৎসার ঘোষণাও দিয়েছে। এর আগে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যান ডিয়েগো দলের ক্লিনিকাল ট্রায়াল সফল হয়। চিকিৎসক এবং রোগী উভয়েই নতুন এই আবিস্কারে খুশি। কারন ছানির অস্ত্রোপচার ব্যয়বহুল এবং যন্ত্রণাদায়কও বটে। নতুন ড্রপ আবিস্কারের ফলে মানুষের চিকিৎসা ব্যয় যেমন কমবে, তেমনিভাবে যন্ত্রণারও অবসান হবে।
ছানি বা ক্যাটারাক্ট সারা বিশ্বে খুব সাধারণ একটি রোগ। বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষের চোখে ছত্রাক সংক্রমণের ফলে লেন্স ক্রমশ ঘোলা হয়ে ছানি পড়ে এবং অকাল অন্ধত্ব ডেকে আনে। যখন আমাদের চোখের লেন্সের ক্রিস্টালিন প্রোটিনগুলির গঠন হ্রাস পায়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত বা অসংগঠিত প্রোটিনগুলি ঝাপসা হয়ে যায় এবং একটি মিল্কি নীল বা বাদামী স্তর তৈরি করে। যদিও ছত্রাক এক চোখের থেকে অন্য দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে না, তবে উভয় চোখেই তারা স্বাধীনভাবে সংক্রমণ ঘটতে পারে।আমেরিকার ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ৪০ বছর বয়সী আমেরিকানদের অর্ধেকেরও বেশির চোখে ক্যাটারাক্ট সার্জারি আছে। 
ফ্রেড হোলস ফাউন্ডেশনের মতে, বিশ্বের প্রায় ৩২.৪ মিলিয়ন মানুষ আজ ছানির কারনে অন্ধ, এবং তাদের বেশিরভাগই উন্নয়নশীল দেশে বাস করে।
নতুন ড্রপ একটি প্রাকৃতিক স্টেরয়েড এর উপর ভিত্তি করে তৈরি যাকে lanosterol বলা হয়। ছত্রাকের উপর লানোস্টেরলের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার ধারণাটি গবেষকদের কাছে আসে যখন তারা চীনের দুই সন্তানের বিষয়ে জানতে পারে, যারা ছত্রাকের কারনে এটি জন্মগতভাবে পেয়েছিল। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে এই ভাইবোনেরা একটি মিউটেশন ভাগ করেছে যা লানোস্টেরলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে, যা তাদের পিতামাতার অভাব রয়েছে। তাই বাবা-মা যদি ল্যানোস্টেরল তৈরি করে এবং থেকে না যায় তবে তাদের সন্তান লানোস্টেরল উৎপাদন করে না এবং ক্যাটারাক্ট হয়না। গবেষকরা বলছেন যে, স্টেরয়েড ত্রুটিযুক্ত স্ফটিক প্রোটিনগুলিকে একত্রিত হতে এবং ছত্রাক গঠন করতে বাধা দেয়।
তারা তিন ধরনের পরীক্ষায় তাদের লানোস্টেরল ভিত্তিক চোখের ড্রপ পরীক্ষা করে। তারা ল্যাবে মানব লেন্স দিয়ে কাজ করে এবং ছানির আকার কমতে দেখেছে। এরপর তারা খরগোশের উপর প্রভাব পরীক্ষা করে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে খু্ব ভাল ফল পায়। 
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এর আণবিক জীববিজ্ঞানী জোনাথন কিং বলেন, "এটি একটি সত্যিই ব্যাপক এবং আকর্ষক আবিস্কার।” 
Source- Internet

Friday, June 14, 2019

মধ্যপ্রাচ্যে আসছে ইতিহাসের ভয়াবহ তাপদাহ-কুয়েতের তাপমাত্রা ছাড়াতে পারে ৬৮ ডিগ্রী

কুয়েতের তাপমাত্রা এবার ৬৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে বলে আশংকা করছেন আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে গেল ৮ জুন বিশ্বের সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করেছে কুয়েত সিটি। সেদিন কুয়েত শহরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। একই সময়ে ছায়ায় তাপমাত্রা ছিল ৫২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। একই দিন সৌদি আরবের আল মাজমাহ শহরের তাপমাত্রা ছিল ৫৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। 
এর আগে ১৯১৩ সালের ১০ জুলাই আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার ফার্নেস ক্রিক র‌্যাঞ্চে ডেখ ভ্যালিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫৬.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস মাপা হয়েছিল। অবশ্য আবহাওয়া এবং জলবায়ু রেকর্ডের দাবিগুলি প্রায়শই জাতিসংঘ সংস্থা বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লুএমও) দ্বারা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯২২-এ এল আজিজিয়া, লিবিয়া ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করার দাবি করলেও পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়। 
একই রেকর্ডে কুয়েত ২১ জুলাই ২০১৬ এবং পাকিস্তানের তুরবাত এ ২০১৭ সালের মে মাসের শেষের দিকে আলাদাভাবে ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ মাপা হয়েছিল। ভারতের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯ মে ২০১৬ তারিখে রাজস্থানের ফালোদিতে এই তাপ ছিল

এদিকে গালফ নিউজের বরাতে জানা যায়, কুয়েতে চরম তাপপ্রবাহের মধ্যে গত বুধবার (১২ জুন) এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। 
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই ওই ব্যক্তি মারা যান। তীব্র রোদের কারণে তিনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন বলে জানা গেছে।
কুয়েত ও সৌদি আরবে এ তীব্র তাপপ্রবাহ এত শিগগিরই শেষ হচ্ছে না। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, কুয়েতের গ্রীষ্মকাল এবার বেশ দীর্ঘ হতে চলেছে। এর মধ্যে, জুলাইয়ে সেখানকার তাপমাত্রা ৬৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়িয়ে যেতে পারে। আরবের আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, কাতার, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও আঘাত হানবে এ তাপপ্রবাহ। গত ৭ জুন ইরাকের মেসান প্রদেশে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হযেছে ৫৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
 গত সোমবার (১০ জুন) একই ধরনের তাপপ্রবাহের শিকার হয়েছে ভারতও। আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট এল ডোরাডোর তথ্যমতে, ওই দিন বিশ্বের উষ্ণতম ১৫টি জায়গার মধ্যে আটটি ছিল ভারতে, বাকিগুলো ছিল পাশের দেশ পাকিস্তানে।
ভারতের আবহওয়া বিভাগ জানিয়েছে, সোমবার (১০ জুন) রাজস্থানের চুরু শহরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সূত্র ও ছবি- গালফ নিউজ, স্কাই মিট ওয়েদার ও গুগল।

Thursday, June 13, 2019

নাইটক্লাব, তাও আবার হালাল!! চালু করছে সৌদি আরব

নাইট ক্লাব! তাও আবার হালাল! অদ্ভুত এই ধারণা নিয়ে বিশ্বের প্রথম হালাল নাইট ক্লাব চালু হচ্ছে সৌদি আরবে। সেখানে নারী পুরুষের একসঙ্গে নাচ-গানের সুযোগসহ থাকছে রাতের জীবনের সব সুবিধাই। শুধু থাকছেনা মদ বা নেশা জাতীয় পানীয়।
সম্প্রতি রাজপরিবারের এক সাবেক বধু সব গোমর ফাঁস করার পর এবার এককাঠি সরেস হয়ে নিজেরাই খোলামেলা সিদ্ধান্ত জানিয়েছে পরিবারটি। এর ফলে নিজের খোলস থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসছে মুসলিমদের পবিত্র ভূমির দেশটি।
 বুধবার সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া ঘোষনায় বলা হয়, নাইট ক্লাবটি চালু করা হবে জেদ্দা শহরে। তবে এটা অন্য নাইট ক্লাবের মতো এটা হবে না। এটা হবে ‘হালাল নাইট’ ক্লাব। এখানকার সব খাবার হালাল হবে।

দুবাই ও বৈরুতের বিখ্যাত ব্র্যান্ড নাইটক্লাব হোয়াইটের শাখা হিসেবে জেদ্দায় চালু হবে এটি। এতে থাকবে বিলাসবহুল ক্যাফে এবং লাউঞ্জ। হালাল নাইটক্লাবে ওয়াটারফ্রন্ট থাকবে, এর সঙ্গে থাকবে বিশ্বের খ্যাতনামা মিউজিক গ্রুপের পরিবেশনা। ইলেকট্রনিক ডান্স মিউজিক, বাণিজ্যিক মিউজিক, হিপহপ মিউজিক উপভোগ করা যাবে হালাল নাইট ক্লাবে।
এ নাইটক্লাবের লাউঞ্জের একটি অংশে থাকবে নাচের ফ্লোর। নারী-পুরুষ সবার জন্য এ ফ্লোর উন্মুক্ত থাকবে। হোয়াইটের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাই এখানে পাওয়া যাবে। তবে এই নাইটক্লাবে মদজাতীয় পানীয় পাওয়া যাবে না। সৌদিতে মদ কেনাবেচা অবৈধ। আর কেউ যদি মদ কেনাবেচা করেন, তাঁকে শাস্তি পেতে হয়।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে সৌদি সরকারের নাইট ক্লাব চালুর উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা চলছে।  সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস, আরব নিউজ

Wednesday, June 12, 2019

ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নতুন ওষুধ আবিস্কার করে বিশ্বকে তাক লাগালেন বাংলাদেশি অধ্যাপক

এবার সংক্রামক ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ আবিস্কারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী অধ্যাপক হেমায়েত উল্লাহ ও তার দল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, হেমায়ত উল্লাহ, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তার এই যুগান্তকারী আবিস্কার সারা পৃথিবীতে হই চই ফেলে দিয়েছে। 

কারন বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই ভাইরাস প্রতিরোধী নতুন ওষুধ আবিস্কারের চেষ্টা চালিয়ে গেলেও খুব একটা সফলতা আসেনি। এর উপর সারা দুনিয়ায় এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারে অকার্যকর হয়ে পড়ছে পুরনো ওষুধগুলো। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে মানুষের ওষুধ ব্যবহারে তেমন কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অকারণ এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে রোগজীবানুগুলো ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ’সুপারবাগ’ এ রুপ নিচ্ছে যার সংক্রমণ নিশ্চিত মৃত্যুর দিকেই ঠেলে নিচ্ছে আক্রান্তদের।
হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞান বিভাগের গবেষক হেমায়েত উল্লাহ ও তার দলের একটি গবেষণা প্রতিবেদন সম্প্রতি জৈব চিকিৎসা জার্নাল অনকোটাইলেস এ প্রকাশিত হয়েছে। যাতে হেমায়েত উল্লাহ দেখিয়েছেন সুনির্দিষ্ট প্রোটিন RACK1  নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মানবশরীরে জীবানুর সংক্রমন ঠেকানো যাবে। এর ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, হেপাটািইটিস সি, পোলিও, ড্রোসফিলা সি, ক্রিকেট প্যারালাইসিস সহ বহু মারাত্মক রোগের সংক্রমন প্রতিহত করবে।
আবিস্কারের প্রমাণ হিসাবে, জার্নালে হার্পস সিম্পলক্স ভাইরাস -1 এর বিরুদ্ধে ওষুধগুলির কার্যকারিতা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়। যা সাধারণ জীবাণু যা মানুষের প্রজননতন্ত্র অথবা মুখের উপর বেদনাদায়ক ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে। অধ্যাপক হেমায়েত উল্লাহর আবিস্কার সফলভাবেই এই জীবানুর বংশবিস্তার ও সংক্রমণ প্রতিহত করেছে।
অধ্যাপক হেমায়েত উল্লাহ উদ্ভিদ প্রোটিনের উপর গবেষণা করার সময় প্রতিকার উদ্ভাবন করেছিলেন যা ডেঙ্গু সহ ভাইরাল রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধ তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
সম্প্রতি মার্কিন টিভি চ্যানেল ফক্স ফাইভের সাক্ষাত্কারে হেমায়েত উল্লাহ এই আবিস্কারের বিস্তারিত বর্ননা দেন। তিনি সেখানে বলেন, "আমরা একটি উদ্ভিদ প্রোটিন নিয়ে কাজ করছিলাম। মানব দেহে অনেক ভাইরাস প্রজনন এর জন্য একই প্রোটিন ফিড পাওয়া যায়। আমরা ভেবেছিলাম, যদি আমরা প্রোটিনের অপারেশন প্রতিরোধ করতে পারি, তাহলে ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাবে না। গবেষণার প্রথম পর্যায়ে আমরা সফল হয়েছি।
বিদ্যমান ওষুধের মৌলিক ত্রুটি হ'ল তারা আক্রান্ত শরীরের জন্য দীর্ঘ লড়াই করতে পারে না। যেমন মানুষ নিরাময় বা প্রতিরোধের জন্য একটি ভাইরাস সনাক্ত করে, তেমনি ভাইরাসও ওষুধটি কী ভাবে কাজ করে তাও পর্যবেক্ষণ করে। ভাইরাস তারপর অবস্থা বুঝে ওষুধটির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। অতএব আমরা শুরুতে ওষুধের ভাল কাজ দেখলেও নির্দিষ্ট সময়ের পর সেই ওষুধের আর কার্যকারিতা থাকছেনা। এক্ষেত্রে হেমায়ত উল্লাহের আবিষ্কার অনন্য। তার আবিস্কার ভাইরাসের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ না করলেও তাকে প্রতিহত করবে যাতে সেটি সংক্রমন না ছড়াতে পারে। 

গবেষণাটি হেমায়েত উল্লাহের নেতৃত্বে একটি দল দ্বারা পরিচালিত হয় এবং হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন-কিয়ী তং এবং সের্গেই নেখাইয়ের আরও দু’জন গবেষক এতে কাজ করেন।
তারা অ্যাক্টিভেটেড সি Kinase 1 এর জন্য রিসেপটর নামক প্রোটিন খুঁজে পেয়েছেন যা মানব দেহে অনেকগুলি ভাইরাস বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে হেমায়ত উল্লাহ এবং তার দলের আবিস্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির প্রোস্ট এবং প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা অ্যান্থনি ওয়াটোহ বলেন, "হেমায়েত উল্লাহ ও তার দলটি প্রদাহজনক ওষুধ সৃষ্টিতে একটি বড় সুখবর এনেছেন। আমরা আশা করি এটি অনেক রোগের চিকিৎসায় সহায়ক হবে। 

অনেক ভাইরাস নিরাময় করতে সক্ষম হওয়ার পদ্ধতি আশা করে হেমায়ত উল্লাহ বলেন, "গবেষণায় এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তার কার্যকারিতা কোন পশু শরীরের প্রয়োগ করার পরে ভাল বোঝা যেতে পারে। আমরা আশাবাদী যে পরবর্তী 2-3 বছরে সফলভাবে প্রদাহজনক ওষুধ প্রয়োগ করা সম্ভব হবে। "ওষুধ আবিস্কারের বিষয়ে অধ্যাপক হেমায়ের উল্লাহ বলেন "যদিও ফলাফলগুলি প্রাথমিক তবে তারা পরীক্ষাগারে উচ্চ কার্যকারিতা প্রদর্শন করে। এই পদ্ধতির নতুনত্বটি নিশ্চিত করে যে ওষুধ শুধুমাত্র একটি ভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট নয় তবে এটি একই হোস্ট ফ্যাক্টর ব্যবহার করে এমন বিভিন্ন রোগের ভাইরাসগুলির বিরুদ্ধে কার্যকর হবে। হিউম্যান প্যাথোজেনিক ভাইরাসগুলি ইতিমধ্যে একই হোস্ট ফ্যাক্টর ব্যবহার করতে পরিচিত। আমরা এখন কি প্রয়োজন পশু মডেল এবং প্রাক ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরীক্ষা। আশা করা যায় যে তহবিল পাওয়া গেলে, আমরা ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে চুড়ান্ত আবিস্কারটি নিয়ে মানবজাতির সামনে হাজির হতে পাররো।

Tuesday, June 11, 2019

এবার প্রাণের ঘি ও রাধুনীর জিরা ও ধনিয়া গুড়া সহ ২২টি পণ্য বাজার থেকে তোলার নির্দেশ বিএসটিআই এর!

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, প্রাণ ডেইরির পণ্যসহ মোট ২২টি পণ্যকে ‘নিম্নমানের’ বলে ঘোষণা করে এ  পণ্যগুলোকে বাজার থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মান নির্ধারণকারী সংস্থা বিএসটিআই।
 মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে
৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে পণ্যগুলো তুলে নিতে কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেয় বিএসটিআই। এর আগে খোলা বাজার থেকে সংগ্রহ করা ৪০৬টি পণ্যের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় অবশিষ্ট ৯৩টি পণ্যের মান পরীক্ষা করে প্রতিষ্ঠানটি।
বিএসটিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পণ্যগুলোর মানোন্নয়ন করে পুনঃঅনুমোদন ব্যতিরেকে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের পণ্য বিক্রি-বিতরণ ও  বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার হতে বিরত থাকার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারীগণকে বিক্রিত মালামাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭২  ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ প্রদান করা হলো।
যে ২২টি কোম্পানিকে বাজার থেকে তাদের পণ্য সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে:
প্রাণ ডেইরির প্রাণ প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের ঘি, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের রাঁধুনী ব্র্যান্ডের ধনিয়া গুঁড়া ও জিরার গুঁড়া, হাসেম ফুডসের কুলসন ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই, এস এ সল্টের মুসকান ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।
এ ছাড়া রয়েছে, চট্টগ্রামের যমুনা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের এ-৭ ব্র্যান্ডের ঘি, চট্টগ্রামের কুইন কাউ ফুড প্রোডাক্টসের গ্রিন মাউন্টেন ব্র্যান্ডের বাটার অয়েল, চট্টগ্রামের কনফিডেন্স সল্টের কনফিডেন্স ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ঝালকাঠির জে কে ফুড প্রোডাক্টের মদিনা ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই, চাঁদপুরের বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরির উট ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ এবং চাঁদপুরের জনতা সল্ট মিলসের নজরুল ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ। এসব পণ্যের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বিএসটিআই। এ ছাড়া থ্রি স্টার ফ্লাওয়ার মিলের থ্রি স্টার ব্র্যান্ডের হলুদের গুঁড়া এবং এগ্রো অর্গানিকের খুশবু ব্র্যান্ডের ঘি নিম্নমানের হওয়ায় কোম্পানি দুটির লাইসেন্স বাতিল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এগুলো বাদে নাম প্রকাশ না করে আরও ৮টি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের কোনো লাইসেন্স ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছিল। নাম না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএসটিআই।
বাজার থেকে ৪০৬টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তার মান পরীক্ষা করে বিএসটিআই। প্রথমধাপে ৩১৩টি পণ্যের মান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে তারা। গত ১ মে সেখান থেকে ৫২টি ব্র্যান্ডের পণ্যকে নিম্নমানের বলে ঘোষণা করা হয়। অবশ্য কয়েকটি পণ্য মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বিএসটিআই। আজ দ্বিতীয় ধাপে বাকি ৯৩টি পণ্যের মান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হল।

Saturday, June 8, 2019

আগামী বছরই বাজারে আসছে কৃত্তিম কিডনী: আবিস্কারক বাংলাদেশে জন্ম নেয়া শুভ রয়!

কৃত্রিম কিডনি তৈরি করে ফেলেছেন বাঙালি বিজ্ঞানী শুভ রায়। খুব শিগগিরই বাজারে আসছে এই কৃত্রিম কিডনি। কম খরচে কিডনির সমস্যার চটজলদি সমাধান। শুভ রয়ের দাবি কিডনী প্রতিস্থাপনে বর্তমানে যে খরচ হয়, তার থেকে অনেক কমেই মানুষ অচল কিডনী জনিত সমস্যাগুলো থেকে সহজে মুক্তি পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্ণিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকের জন্ম ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে, ঢাকায়। যদিও পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রেই।

ক্যালিফোর্ণিয়িা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত ওই প্রকল্পের নাম কিডনী প্রজেক্ট। সেখানে অবশ্য বাঙালি শুভ রয়ের সঙ্গে এই আবিস্কারে হাত লাগিয়েছেন নেফ্রোলজিষ্ট উইলিয়াম এইচ ফিসেল। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বহু কিডনী বিকল রোগীর শরীরে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্তিম এই কিডনী।
যার আকার হাতের মুঠোর সমান। খরচ তুলনায় অনেকটাই কম। ২ কিডনি বিকল হলে রক্ত শোধনে ঘাটতি দেখা দেয়। শরীরে বিষাক্ত বর্জ্য জমে রক্ত দূষিত হয়।
বর্তমানে এই সমস্যা সমাধানের জন্য ডায়ালিসিস প্রক্রিয়ার সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে রক্ত শোধন করা হয়।এজন্য রোগীকে একাধিক দিন হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। শুধু তাই নয়, ডায়ালিসিস চলাকালীন বা পরে অধিকাংশ রোগী ডায়াবেটিস ও হাইপার টেনশনে ভোগেন। যা সমস্যা আরও জটিল করে তোলে।বিকল কিডনির বদলে রোগীর দেহে সুস্থ কিডনি প্রতিস্থাপনও হয়ে থাকে। তবে তা সহজলভ্য নয় এবং খরচ সাপেক্ষ। এই সব সমস্যার সমাধানে এই দশকের মধ্যেই বাজারে আসছে কৃত্রিম কিডনি। যা স্বাভাবিক কিডনির সব কাজ করতে সক্ষম।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং এই যন্ত্রের সহ-আবিষ্কারক শুভ রায় জানিয়েছেন, চলতি দশকের শেষ অথবা নয়া দশকের গোড়ায় বাজারে পাওয়া যাবে এটি। আমেরিকায় তৈরি এই যন্ত্র আপাতত সেদেশের কয়েক হাজার রোগীর দেহে পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়েছে।
শারীরিক সুরক্ষা ও সর্বাঙ্গীন সাফল্যের পরীক্ষায় পাস করলে তা বাজারে ছাড়ার অনুমতি দেবে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক এফডিএ। 
কীভাবে কাজ করে এটি? শুভ রায় জানিয়েছেন,যন্ত্রটি সহজের পেটের ভিতরে স্থাপন করা যায়। স্বাভাবিক কিডনির মতো রক্ত শোধন করা ছাড়াও হরমোন উত্পাদন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। 

সাধারণ হিমোডায়ালিসিস প্রক্রিয়ার মতো রক্ত থেকে বিষাক্ত বর্জ্য বাদ দেওয়া ছাড়াও জীবন্ত কিডনি কোষ দিয়ে তৈরি বায়ো রিঅ্যাক্টর এবং সূক্ষ্ণ পর্দার মাধ্যমে রক্ত শোধনের কাজ নিখুঁতভাবে করতে পারে কৃত্রিম কিডনি।
ডায়ালিসিস ছাড়াও ৬০ হাজারের বেশি মানুষ কিডনিতে পাথর এবং মূত্রাশয়ের চিকিত্সা করিয়েছেন। কৃত্রিম কিডনির সঠিক খরচের হিসাব এখনই না বললেও শুভ রায়ের দাবি, ডায়ালিসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপনের চেয়ে অনেক কম খরচে বসানো যাবে কৃত্রিম কিডনি।
সূত্র: ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্ণিয়া, উইকিপিডিয়া ও গুগল। 

এই বালকের শিরোশ্ছেদ করবে সৌদি!

সরকারবিরোধী স্লোগান দেওয়ায় মুর্তাজা কুরেইরিস নামের এক বালকের শিরোশ্ছেদ করার আয়োজন চলছে সৌদি আরবে। সৌদি আরবের ইস্টার্ন প্রদেশে মুর্তাজা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়েছিল।
২০১১ সালে সৌদি রাজতন্ত্রের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র দাবিতে সেসময় দেশজুড়ে যে গণবিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল, তার অংশ হিসেবেই মুর্তাজা কুরেইরিস তার বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে সাইকেল রাইডে নেমেছিল। সে সময় মুর্তাজার বয়স ছিল ১০ বছর।
এই অল্পবয়সী বালকদের জড়ো হওয়ার বিষয়টি সে সময় 'পর্যবেক্ষণ' করে সৌদি সরকার। ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তিন বছর পর মুর্তাজাকে ১৩ বছর বয়সে গ্রেপ্তার করে রাজতন্ত্রের বাহিনী। পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ বাহরাইনে চলে যাওয়ার সময় সীমান্তে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী 'রাজনৈতিক বন্দী' হিসেবে মুর্তাজাকে নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে।
প্রায় চার বছর 'বিচার-পূর্ব কারাভোগ 'করানোর পর এখন মুর্তাজাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করতে চায় সৌদি আরব সরকার। মুর্তাজাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করতে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। মুর্তাজার বিরুদ্ধে যে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে, সে অনুসারে 'অপরাধ সংঘঠিত করার সময়' তার বয়স ছিল ১০ বছর।
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মুর্তাজার ভাই আলী কুরেইরিস মোটরসাইকেলযোগে পূর্বাঞ্চলীয় শহর আওয়ামিয়াতে গিয়ে থানায় পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করেন। সে সময় তার সঙ্গে ছিল মুর্তাজাও। মুর্তাজার ভাইকে পরে নির্মমভাবে হত্যা করে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী।
মুর্তাজার এখন সৌদি আরবের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে বিচার চলছে। মৃত্যুদণ্ড চেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে 'উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী'র সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এমনকি বিক্ষোভের সময় সহিংসতা, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পেট্রল বোমা হামলায় সহযোগিতা, ভাইয়ের জানাজার সময় পদযাত্রা বের করার অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রাষ্ট্রপক্ষ এসব অভিযোগের ব্যাপারে মুর্তাজার কথিত 'স্বীকারোক্তি' হাজির করলেও অধিকারকর্মী ও স্বজনরা বলছেন, হুমকি-ধামকি দিয়ে, নির্যাতন করেই এ জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে সৌদি আরবে প্রায় ৩৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই শিয়া সম্প্রদায়ের।
সূত্র: পার্স টুডে/আলজাজিরা/কালের কণ্ঠ
এ সংক্রান্ত আলজাজিরার প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন


Tuesday, June 4, 2019

চাঁদ দেখা: মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবের তারিখ নির্ধারণে বিজ্ঞানকে কেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না

চাঁদ দেখা: মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবের তারিখ নির্ধারণে বিজ্ঞানকে কেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না

মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবগুলোর তারিখ নির্ধারিত হয় নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। মুসলমানরা যে হিজরি সন ব্যবহার করে, তা চন্দ্রবর্ষপঞ্জী নির্ভর। কিন্তু আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের মাধ্যমে কোন দেশে কখন নতুন চাঁদ দেখা যাবে তা বহু আগে থেকেই হিসেব করে বলে দেয়া সম্ভব।
কিন্তু তারপরও কেন তাহলে মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে এত বিতর্ক এবং বিভ্রান্তি? কেন একটি নির্দিষ্ট তারিখে ধর্মীয় উৎসব করার ব্যাপারে মুসলিম ধর্মীয় নেতারা এক হতে পারছেন না?
এ নিয়ে বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশের একজন নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী এবং ইসলাম ও বিজ্ঞান বিষয়ক বেশ কয়েকটি বইয়ের লেখক ড: শমসের আলীর সঙ্গে।
ড: আলীর মত হচ্ছে, ধর্মীয় উৎসবের তারিখ নির্ধারণের জন্য ইসলামে যে বিধান আছে, তার সঙ্গে বিজ্ঞানের কোন বিরোধ নেই। কাজেই আধুনিক জ্যোর্তিবিজ্ঞান প্রয়োগ করে খুব সহজেই বলে দেয়া সম্ভব কখন হিজরি সনের নতুন চান্দ্র মাস শুরু হচ্ছে। ফলে সারা বিশ্বের মুসলমানরা চাইলে একই দিনেই পালন করতে পারেন তাদের ধর্মীয় উৎসব, এ নিয়ে এত বিভ্রান্তি বা সংশয় থাকে না।
তারিখ নির্ধারণ নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
খালি চোখে চাঁদ দেখা যাওয়ার পরই হিজরি সনের একটি নতুন চান্দ্র মাস শুরু হবে, এটাই ইসলামের বিধান। বহু ধর্মীয় নেতা এখনো পর্যন্ত খালি চোখে চাঁদ দেখা যাওয়ার ওপরই নির্ভর করতে চান।
ডঃ শমসের আলী বলছেন, তারিখ নির্ধারণ নিয়ে এক সময় যে বিতর্ক হতো, তার একটা যুক্তি ছিল। কারণ তখন চাঁদ খালি চোখেই দেখতে হতো। কোন পাহাড়ের এক দিক থেকে চাঁদ দেখা যেত, অন্যদিক থেকে দেখা যেত না। মুসলমানদের যে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, সেগুলো ছিল বিচ্ছিন্ন, যোগাযোগ এত তড়িৎ এবং ঘনিষ্ঠ ছিল না।
"কিন্তু এখন এসব অজুহাত দেয়ার আর সুযোগ নেই", বলছেন তিনি।
"পৃথিবী তো একটাই। চাঁদও একটি। প্রতি মাসেই চাঁদ ওঠে। কোথাও চাঁদ দেখা যাওয়ার মানে হচ্ছে সেই চন্দ্র মাস শুরু হয়ে গেল। পুরো বিশ্ব এখন তাৎক্ষণিক এবং ব্যাপক যোগাযোগের আওতায়। কাজেই এখন কোন একটি জায়গায় চাঁদ দেখা যাওয়ার পর একই দিনে উৎসব না করার বিরুদ্ধে কোন ওজর আপত্তি থাকতে পারে না।"
ডঃ শমসের আলী বলেন, বিশ্বের নামকরা সব ধর্মীয় পন্ডিতরা পরামর্শ করে ঠিক করেছিলেন একটা দেশে চাঁদ দেখা গেলে, অন্যদেশেও সেটা মানা হবে। ওআইসির (অর্গেনাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন) এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের অনেক দেশই গ্রহণ করেছে, কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো শুধু নেয়নি।
বাংলাদেশ কেন পারছে না
ডঃ শমসের আলী জানান, এই বিষয়টি নিয়ে তারা বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে তিনদিন ধরে বৈঠকও করেছিলেন।
"ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আমরা তিন দিন ব্যাপী একটি আলোচনা করেছিলাম। সব যুক্তি তর্ক তুলে ধরে বললাম, যে এখন যে ধরণের যোগাযোগ সারা বিশ্বে, একটা জায়গায় চাঁদ উঠলে সেটা সবার জন্য বাইন্ডিং হবে। পৃথিবীর অন্য কোথাও চাঁদ দেখা গেল কিনা, সেটা দেখে সিদ্ধান্ত নিন, এটাই আমরা বলেছিলাম। গত বছর আমরা একথা বলি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে বলা হয়েছিল এটা প্রধানমন্ত্রীকে বলার জন্য।"
"আমার অনুমান, প্রধানমন্ত্রী এই সায়েন্টিফিক জিনিসটার ব্যাপারে কনভিন্সড। কিন্তু উনার তো একটা পরামর্শ দরকার। কারও তো বলা উচিৎ। ওআইসির সদস্য হিসেবে, অন্য কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে, সেটিকে আমরা দেখা ন্ডারের শুরুটা ধর্মীয়, কিন্ত গণনার পদ্ধতি তো বৈজ্ঞানিক । চাঁদ ওঠা, সূর্য ওঠা, এগুলো তো বৈজ্ঞানিক। বাংলাদেশ এখন কক্ষপথে স্যাটেলাইট ছেড়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাপারে বাংলাদেশের বেশ আগ্রহ। তাহলে কেন আমরা এটা মেনে নেব না।"
আন্তর্জাতিকভাবে কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল
২০১৬ সালের মে মাসে ইস্তাম্বুলে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়েছিল তুরস্কের উদ্যোগে। সেখানে তুরস্ক, কাতার, জর্ডান, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরোক্কো সহ ৫০টি দেশের ধর্মীয় পন্ডিত এবং বিজ্ঞানীরা অংশ নেন। ইন্টারন্যাশনাল হিজরি ক্যালেন্ডার ইউনিয়ন কংগ্রেস নামে পরিচিত এই সম্মেলনে হিজরি ক্যালেন্ডার নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিমদের মধ্যে যে বিভক্তি সেটা নিরসনে এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সম্মেলনে দুটি প্রস্তাব বিবেচনা করা হয়েছিল। প্রথমত সারা বিশ্বের জন্য দ্বৈত বর্ষপঞ্জী চালু করা, পূর্ব গোলার্ধের জন্য একটি, আর পশ্চিম গোলার্ধের জন্য একটি। আর দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল, সবাইকে একটি বর্ষপঞ্জীর মধ্যে নিয়ে আসা। শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞ একটি বর্ষপঞ্জীর পক্ষেই মত দেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্সের সেসময়ের প্রেসিডেন্ট মেহমেট গোরমেজ তখন একটি তুর্কী সংবাদপত্র ডেইলি সাবাহ'কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এই নতুন বর্ষপঞ্জী মেনে নিতে কিছু দেশ হয়তো অসুবিধায় পড়বে, কিন্তু এটি যাতে বিশ্বজুড়ে গৃহীত হয় সে ব্যাপারে ওআইসি তাদের প্রভাব কাজে লাগাতে পারে।
মিস্টার গোরমেজ আরও বলেন, "বৈজ্ঞানিক তথ্য সম্পর্কে ইসলামী দুনিয়ায় এক ধরণের ভুল ধারণা আছে। আজকের যুগে, যখন মানুষ চাঁদে যেতে পারে এবং চাঁদ-সূর্যের প্রতি মূহুর্তের গতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে, তখন পাহাড় বেয়ে উঠে খালি চোখে চাঁদ দেখতে হবে বলে গোঁ ধরে থাকাটা ভুল।"
Source- BBC


Saturday, June 1, 2019

বিজেপির গরীব মন্ত্রী সারেঙ্গির ভয়ানক অতীত!!

বিজেপির গরীব মন্ত্রী সারেঙ্গির ভয়ানক অতীত!! 

বৃহস্পতিবার যখন ভারতের নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিচ্ছিল, তখন সবচেয়ে বেশি করতালি পড়েছিল প্রায় অপরিচিত, দেখতে শীর্ণকায় একজন মন্ত্রীর বেলায়।তার নাম প্রতাপ চন্দ্র সারাঙ্গি। নিজের রাজ্য উড়িষ্যার বাইরে তাকে খুব কম মানুষই চেনেন। কিন্তু গত সপ্তাহে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেন।
একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাওয়ার জন্য একেবারে সাধারণ পোশাকে তিনি তাঁর বেড়ার কুঁড়েঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন। কপর্দকহীন অবস্থা থেকে বিপুল বিত্তশালী হওয়ার কাহিনী ভারতে সবসময় সাড়া জাগায়। কাজেই মিস্টার সারাঙ্গির কাহিনীও সেরকম তোলপাড় সৃষ্টি করলো।
কিন্তু সদ্য জনপ্রিয়তা পাওয়া এই প্রতাপ চন্দ্র সারাঙ্গি আসলে কে? খোঁজ-খবর নিয়ে যেটা জানা যাচ্ছে, মিস্টার সারাঙ্গির অতীত ইতিহাস অতটা সুবিধের নয়।
১৯৯৯ সালে ভারতে একজন খ্রিস্টান মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস এবং তার দুই সন্তান খুন হন উন্মত্ত হিন্দু জনতার হাতে। ভারতের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা এই হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী করেন কট্টরপন্থী হিন্দু গোষ্ঠী বজরং দলকে। প্রতাপ চন্দ্র সারাঙ্গি তখন এই বজরং দলের নেতা। তবে সরকারি তদন্তে ঐ ঘটনার সঙ্গে কোন একটি গোষ্ঠীর সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
তবে ২০০৩ সালে দীর্ঘ বিচার শেষে এই ঘটনায় মোট ১৩ জনকে সাজা দেয়া হয়। তাদের একজন দারা সিং ছিলেন বজরং দলের সদস্য। তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। উড়িষ্যার হাইকোর্ট দুবছর পর অবশ্য তার মৃত্যুদণ্ড রদ করে দেয়। সেই সঙ্গে আরও ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে মুক্তি দেয় আদালত। কারণ তাদের সাজা দেয়ার মতো যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মিস্টার সারাঙ্গি তখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন খ্রিস্টান মিশনারীরা পুরো ভারতকে ধর্মান্তরিত করার শয়তানি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
যারা তখন মিস্টার সারাঙ্গির সাক্ষাৎকার নেন তাদের একজন ছিলেন উড়িষ্যার সাংবাদিক সন্দীপ সাহু।
সেই সাক্ষাৎকারে মিস্টার সারাঙ্গি যদিও খ্রিস্টান মিশনারী গ্রাহাম স্টেইনস এবং তার দুই সন্তানকে হত্যার নিন্দা করেন, ধর্মান্তরের বিরুদ্ধে তিনি তার শক্ত দৃষ্টিভঙ্গীতে অনড় ছিলেন।
২০০২ সালে বজরং দলসহ ডানপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীগুলো উড়িষ্যা রাজ্য বিধান সভায় হামলা চালায়। এই ঘটনায় মিস্টার সারাঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নিসংযোগ, হামলা এবং সরকারি সম্পদের ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।
মিস্টার সারাঙ্গিকে মন্ত্রী করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে যে মাতামাতি, সেখানে অবশ্য এর কোন কিছুর উল্লেখ নেই। বরং তিনি কত ‘সাধাসিধে’ জীবনযাপন করেন সেটাই সবাই উল্লেখ করছেন।
সন্দীপ সাহু জানান, ‘মিস্টার সারাঙ্গি তার এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার জন্য সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়ান। ভুবনেশ্বরেও প্রায়শই তাকে দেখা যায় পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে রাজ্য পরিষদের সভায় যাচ্ছেন। রাস্তার ধারের কোন সাধারণ খাবার দোকানে খাচ্ছেন। রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে ট্রেনের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।’
সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে যখন মিস্টার সারাঙ্গি তার দুই বিত্তশালী ও ক্ষমতাবান প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করেন, তখন সেই লড়াইকে ডেডিড বনাম গোলিয়াথের লড়াই বলে তুলনা করা হয়।
বৃহস্পতিবার যখন তিনি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, তখন তার নির্বাচনী এলাকায় উৎসব শুরু হয়ে যায়। সমর্থকরা আতশবাজি পুড়িয়ে এবং মিষ্টি বিতরণ করে তাদের উল্লাস প্রকাশ করেন। কেউ কেউ তাকে এরই মধ্যে ‘উড়িষ্যার মোদি’ বলে বর্ণনা করতে শুরু করেছেন।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা তারকা বনে যাচ্ছেন তাদের বেলায় এটাই সমস্যা। কোন একটা ছবি বা কোন একজনের গল্প সেখানে মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করছে। এর ফলে কোন ব্যক্তি অতীতে কী করেছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেই তাকে লোকজন নায়কে পরিণত করছে।
সূত্র: বিবিসি

Friday, May 31, 2019

Breaking News|| Bangladeshi Scientist breakthrough a new Antivirul drug

Howard University researchers within the Department of Biology have published a breakthrough manuscript today on developing broad anti-viral drugs that will inhibit pathogenic viruses from replication. This is a stark difference from current anti-viral drugs that become less effective as viruses become more resistant. The report, published by peer-reviewed bio-medical journal Oncotarget and featured on the journal cover page, takes a detailed look at the Howard University team’s innovative approach to isolating anti-viral compounds and the possibility of future drugs that will offer effective and durable treatment for many pathogenic viruses.
As a proof of concept, the paper detailed the effectiveness of the drugs against Herpes Simplex Virus-1, a common virus that causes painful sores on genitals and/or mouth.
“The work of Dr. Ullah and his research team is a critical breakthrough in the development of anti-viral drugs,” says Provost and Chief Academic Officer Anthony K. Wutoh. “We anticipate that this work will ultimately impact the development of medications to treat various illnesses, including more effective treatments against Herpes Simplex Virus-1.”

Associate Professor of Biology Hemayet Ullah, Ph.D. leads the team of student and faculty researchers and identified a host protein called RACK1, which is often used by pathogenic viruses for their own replication. The small molecules developed by the team effectively render the host RACK1 protein unavailable to the viruses; thereby inhibiting the virus replication within the host cells. Ullah says the results are encouraging and indicate that further research will establish the potential compounds as durable anti-viral drugs. As these drugs do not directly target the virus, Ullah predicts that the viruses would have almost no opportunity to develop resistance, effectively making this a durable drug discovery approach.
“Though the results are preliminary but they show high efficacy in the lab experimentation. The novelty of this approach ensures that the drugs will not be only specific to a single virus but will be effective against diverse pathogenic viruses that use the same host factor. A number of human pathogenic viruses are already known to use the same host factor. What we now need are tests in animal model and in pre-clinical trials. Hopefully with funding available, we will be able achieve these goals in 2 to 3 years,” explained Ullah.
He says most of the wet lab research works were completed at the University, citing the modern lab space inside the Interdisciplinary Research Center as a facilitator for multi-lab collaboration. In addition to graduate students, who serve as researchers for the project, Ullah credits Qiyi Tang, Ph.D., and Sergei Nekhai, Ph.D., both of the College of Medicine and Dr. Dakshanamurthy’s lab at Georgetown University, with sharing his vision for experimentation and appreciating interdisciplinary collaboration.
Source: Internet

মন্ত্রির সম্পদ একটি ভাঙ্গা কুড়ে ঘর আর ২৫ বছরের পুরনো সাইকেল!!

একজন মন্ত্রির নূন্যতম সম্পদ কত হতে পারে? নিদেনপক্ষে লণ্ডন-নূইয়র্ক দু’ একখানা বাড়ি। সযতনে রাখা ব্যাংক ব্যালান্স। ঝাঁ চকচকে কোটি টাকার গাড়ি। এটাই তো স্বাভাবিক। তাই বলে মন্ত্রি থাকবেন ভাঙা এক কুড়েঘরে, চালাবেন ২৫ বছরের পুরনো এক বাইসাইকেল! অবিশ্বাস্য! না বিশ্বাস করেই বা উপায় কি! গেল সপ্তাহেই তো ভারতের মন্ত্রি হিসেবে শপথ নিলেন প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গী।
গেল সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ বাক্য পাঠ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকে নাগাড়ে শপথ পাঠ দেখতে দেখতে দর্শকাসনে ঠায় বসে অনেকেই ক্লান্ত। কিন্তু সাড়ে আটাট ফের যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল রাইসিনার উঠোনে।
রাষ্ট্রপতির সচিব যেই ঘোষণা করলেন, “রাজ্য মন্ত্রী হিসাবে এ বার শপথ নেবেন শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি..”। ওমনি হাততালির ঢেউ উঠল! কে ইনি? একেবারেই সাধারণ গোছের আধাছেড়া সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরা। মাথার চুল উস্কো খুস্কো, হাওয়ায় উড়ছে! 
হ্যাঁ, তাঁকে নিয়ে উন্মাদনা এমনই। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর লক্ষ লক্ষ ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ শহুরে জীবনের চাকচিক্য, বিলাস, সুবিধা থেকে তিনি অনেক দূরে। বালাসোরের এক ঝুপড়ি বাড়িই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা।
 
এবার লোকসভা ভোটে ওড়িশার বালাসোর আসন থেকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গি। তাঁর রাজ্যের মানুষ বলেন, ‘ওড়িশার মোদী’। বালাসোরে বিজু জনতা দলের প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে তিনি হারিয়েছেন ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে।

Thursday, May 30, 2019

সম্প্রীতির অনন্য নজির: অযোধ্যায় মন্দিরে ইফতারের আয়োজন করলো হিন্দু সন্ন্যাসীরা

রাম মন্দির নাকি বাবরি মসজিদ! এই বিতর্কে দগ্ধ অযোধ্যা। এবার তাতেই প্রলেপ দিতে উদ্যোগী হলেন অযোধ্যাবাসী। অযোধ্যার এক মন্দিরে আয়োজন করা হল ইফতারের। সোমবার বিতর্কিত রাম জন্মভূমির কাছে অযোধ্যার ৫০০ বছরের পুরাতন সূর্য কুঞ্জ মন্দিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের যারা রোজা রাখেন তাদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেন হিন্দু সন্ন্যাসীরা।
এ অনুষ্ঠানের ইউএসপি-ই হল কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে ভোট পর্ব মিটতেই ওই ইফতারের আয়োজন করা হয়। ৫০০ বছরের পুরনো সূর্য কুঞ্জ মন্দির থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বিতর্কিত রাম জন্মভূমি এলাকা। কোনরকম রাজনীতির রং বাদ দিয়েই ইফতারের আয়োজন করেছেন সন্ন্যাসীরা।
এ অনুষ্ঠানের গায়ে যাতে রাজনীতির রং না লাগে তার জন্য সপ্তম দফাযর ভোট শেষ হওয়ার পর ওই ইফতার মজলিস এর আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোগতারা। অযোধ্যায় সব ধর্মের মানুষের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতেই এই অরাজনৈতিক আয়োজন বলে জানিয়েছেন, মোহান্ত যুগল কিশোর শরণ শাস্ত্রী। 
সূত্র: টিডিএন বাংলা।
 

খুব কাছের দ্বীপ সেন্টেনিয়েল আইল্যাণ্ড!! এখেনো যেখানে বাস অন্ধকার জগতের রহস্যময় মানুষের!!


ভ্রমনের জন্য আপনার অঢেল টাকা আছে, প্রযুক্তি আছে, বাহন আছে- কিন্তু চাইলেই কি আপনি পৃথিবীর সব জায়গায় যেতে পারবেন? উত্তর- না।  
আর একবার সভ্যতার বাইরে- বিদ্যুত, মোবাইল ফোন, সুপেয় পানি, মজার মজার খাবার, অত্যাধুনিক চিকিৎসা, শিক্ষা সহ আমাদের যাপিত জীবনের সমস্ত উপকরণ ছাড়া নিজেকে ভাবুন তো! তাও এই একুশ শতকে!! পারবেন একদিন কাটাতে? অথচ আমাদের খুব কাছেই রয়েছেন এমন মানুষেরা। যাদের কোন শিক্ষা নেই, প্রযুক্তি নেই, সভ্যতার কোন ছোঁয়া নেই- এমনকি পোশাকও নেই। এমনকি সেখানে কত মানুষ বাস করেন, তারও কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই!!
ভালো কথা, প্রশ্ন উঠতে পারে আমাদের মানুষরা কেন তাদের কাছে সভ্যতার আলো পৌঁছে দিচ্ছে না! কারন এ পর্যন্ত বহুবার চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন এই জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে মানুষ। এমনকি কেউ কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে তাদের জীবিত ফিরে আসার নজিরও নেই বললেই চলে। খালি হাতে তো দূরের কথা ভারতীয় বিমান সেনারা হেলিকপ্টারে গিয়েও মুহুর্মুহ তীরের আঘাতে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরে এসেছে। সেই থেকে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েই ও পথ আর কাউকে মাড়াতে দেয় না। 
বিশ্বের তাক লাগানো ও ভাবনায় ফেলে দেয়ার মতো নিষিদ্ধ দ্বীপটি রয়েছে আমাদের খুব কাছেই। একসময়ের কালাপানি নামে কুখ্যাত আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটিই এই সেন্টেনিয়েল আইল্যাণ্ড। যেখানে গহীন জঙ্গলে এখনো সভ্যতার কোন ছোঁয়া ছাড়াই টিকে রয়েছেন অগনিত মানুষ। 
২০০৬ সালে আন্দামান দ্বীপের দুইজন জেলে এ দ্বীপের কাছাকাছি মাছ ধরতে যায়।  রাতের বেলা অত্যধিক মদ পানে ঘুমিয়ে পড়লে সমুদ্র স্রোতে ভেসে তারা দ্বীপে চলে যায়। দ্বীপ বাসীরা জেলেদের নিসংসভাবে হত্যা করে। ভারতীয় কোস্ট গার্ড জেলেদের লাশ উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার পাঠায় দ্বীপ বাসীরা তাদের হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে তীর ছুড়তে থাকে।  যদিও উদ্ধার অভিযানে আসা হেলিকপ্টার থেকে তাঁদের মরদেহ দেখা গিয়েছিলো। উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারের পাখার ঘূর্ণনে সৃষ্ট প্রবল বাতাদের তোড়ে সেন্টিনেলদের অল্পগভীর কবরের মাটি সরে গিয়ে ঐ দুজন জেলের মৃতদেহ দেখা যায়। কোস্ট গার্ড তীরের মুখে লাশ উদ্ধার না করেই ফিরে আসে।
এর পর ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নেয় সেন্টিনল বাসীদের জীবন যাত্রা বাইরের প্রভাবমুক্ত রাখার। ভারত সরকার তাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা রক্ষার্থে দ্বীপের তিন কিলোমিটারের মধ্যে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী হচ্ছে আন্দামানি জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি জাতিগোষ্ঠী। বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এই জাতি দক্ষিণ এশীয় জনগোষ্ঠীগুলোর একটি। গ্রেট আন্দামান উত্তর সেন্টিনেলী দ্বীপপুঞ্জে এই জনগোষ্ঠীর বাস। বহিরাগতদের ওপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য তারা বিশেষভাবে পরিচিত। সেন্টিনেলী জাতি মূলত একটি শিকারী-নির্ভর জাতি। তারা তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ শিকার, মাছ ধরা, এবং বন্য লতাপাতার মাধ্যমে সংগ্রহ করে। এখন পর্যন্ত তাদের মাঝে কৃষিকাজ করা বা আগুন ব্যবহারে প্রমাণ পাওয়া যায় না
 এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে সেন্টিনেলীদের জনসংখ্যার কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। ধারণা অনুযায়ী এদের জনসংখ্যা সর্বনিম্ন ৩৯ থেকে ২৫০-এর মধ্যে, এবং সর্বোচ্চ ৫০০ পর্যন্ত। ২০০১ সালে পরিচালি ভারতের জনপরিসংখ্যানে ৩৯ জন পৃথক ব্যক্তির উপস্থিতি রেকর্ড করা হয় যাদের মাঝে ২১ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। নিরপত্তাজনিত কারণে এই জরিপটি প্রয়োজনের চেয়েও বেশি দূর থেকে পরিচালনা করা হয়েছিলো এবং এটি সুনিশ্চিতভাবেই ৭২ বর্গকিলোমিটার (১৮,০০০ একর) আয়তনে দ্বীপটির সঠিক জনসংখ্যা নির্দেশ করে না। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে সংঘটিত ভূকম্পন ও সংশ্লিষ্ট সুনামির ফলে সেন্টিনেলীদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ওপর সৃষ্ট কোনো মধ্যম বা দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের কথা জানা যায় না। শুধু এটুকু নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তারা এই দুর্যোগের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সমর্থ হয়েছে।

 ১৯৭৫ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির একজন পরিচালক একটা তথ্যচিত্র বানাবার উদ্দেশ্যে গিয়ে পৌঁছিয়েছিলেন সেই দ্বীপে। কিন্তু হিংস্র উপজাতিরা তার পায়ে বিষাক্ত তীর মারে ফলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। তখন থেকেই সেখানে কারও প্রবেশাধিকার নেই। তারপর আর কেউই সেখানে যেতে খুব একটা ঝুঁকি নেয় না।
কাগজে কলমে সেন্টিনেল ভারতের অধিকারে থাকলেও বাস্তবে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন। এখন পর্যন্ত ভারত সরকারও সেন্টিনেল দ্বীপ সম্পর্কে তেমন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে নি। উল্লেখ্য কুট জাতি হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮৮০ সালে দ্বীপটি দখলের পায়তারা করে । এ উদ্দেশ্য তারা দ্বীপ থেকে কয়েকজন অধিবাসী ধরে নিয়ে আসে।  অপহরনের উদ্দেশ্য ছিল তাদের ভাল খাবার দাবার পরিবেশ দিয়ে তাদের মন জয় করে দ্বীপের দখল নেওয়া। কিন্ত ব্রিটিশদের এই চেষ্টা গোড়াতেই শেষ হয়ে যায় । কারন দ্বীপবাসীদের ধরে আসার পর পরই দ্বীপবাসীরা মারা । এর কারন হিসেবে ধারনা করা হয় তাদের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। সভ্য জগত থেকে অনেক কাল দূরে থাকায় ধারনা করা হয় সর্দি-কাশির মত সাধারন রোগে এরা মারা যেতে পারে !
১৯৬৭ সাল থেকে পোর্ট ব্লেয়ারে অবস্থিত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সেন্টিনেলদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। এসব অভিযানে তাঁদেরকে উপহার হিসেবে সমুদ্র সৈকতে খাবার ছড়িয়ে (যেমন: নারকেল) বন্ধুত্ব স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। এসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেন্টিনেলদের মধ্যে তৈরি বহিরাগতদের সম্পর্কে সৃষ্ট হিংস্র মনোভাব দূর করার চেষ্টা করা হয়। কিন্ত বাস্তবে এসব কোন কাজে আসে নি।
এর পরে ১৯৯১ সালে ভারত সরকার পুনরায় তাদের সাথে সন্ধি করার চেষ্টা করে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে তারা জানিয়ে দেয় যে, তারা বাইরের পৃথিবীর কারও সাথে যোগাযোগ রাখতে চায় না। তারপর থেকে সেন্টিনালিসরা তাদের নির্বিঘ্ন জীবনে ফিরে যায়। পরে ২০০৪ সালের সুনামীতে দ্বীপের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। ভারত সরকার পুনরায় দ্বীপ বাসীরা বেঁচে আছে কিনা জানা জন্যে হেলিকপ্টার পাঠায় দ্বীপ বাসীরা হেলিকপ্টারের দিকে তীর ছোড়ে স্বাগত জানিয়ে জানান দেয় যে তারা বেঁচে আছে।
তো ভেবে দেখুন আমাদের জানার বাইরে এই পৃথিবীতেই কত কিছু লুকিয়ে আছে! যেগুলো জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে পারি, গ্যালাক্সি জয়ের স্বপ্নও দেখতে পারি- কিন্তুেআমাদেরই খুব কাছে লুকিয়ে থাকা অপূর্ সৃষ্টিগুলোর রহস্যভেদ করা হয়দেত আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব হয়ে উঠবে না।


Wednesday, May 29, 2019

অফিসে নিজের সন্তানদের ছবি ঝুলান, আমার নয়: উদ্বোধনী ভাষণে ইউক্রেনের নয়া প্রেসিডেন্ট

প্রত্যেককে নিজের অফিসে সন্তানদের ছবি ঝোলানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। গত ২৭ মে দেয়া উদ্বোধনী ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি।   


জেলেনস্কি বলেন, আমরা দেশকে সব সম্ভাবনা দিয়ে গড়বো যেখানে আইনের চোখে সবাই হবে সমান এবং শাসনকাজ চলবে সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে। আর তা বাস্তবায়ন করতে আমাদের প্রয়োজন জনগণের শাসন, যারা জনগণের জন্য কাজ করবে।

এর আগে নির্বাচনে বিজয়ের পর জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন, আমি কখনো আপনাদের বিশ্বাসের অমর্যাদা করব না।

উল্লেখ্য, নির্বাচনে দাঁড়াবার আগে জেলেনস্কির কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না এবং তিনি একবার টেলিভিশনে মজা করে প্রেসিডেন্টের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
প্রেসিডেন্টের উদ্বোধনী ভাষণ শুনতে এখানে ক্লিক করুন

This photo taken from khulna in 2011 by sony compact camera

দিনাজপুরে লোহার খনি পেলেন বিশেষজ্ঞরা: মান অন্য যে কোন দেশের চেয়ে ভাল

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপর গ্রামে উন্নত মানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনির সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ...